হুগলি, 18 মার্চ: শনিবার সকাল থেকেই হুগলি জেলা জুড়ে ইডির হানা চলে (ED Raid at Hooghly) । স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Bengal Recruitment Scam) গ্রেফতার হওয়া শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হল সেই অভিযানে (ED seized properties of Shantanu) ৷ ব্যান্ডেলে দোতলা বাড়িতে তালা পড়েছে ৷ চুঁচুড়ায় শান্তনুর ফ্ল্যাটের প্রমোটার অয়ন শীলের বাড়িতেও ইডির আধিকারিকরা হানা দেন ৷ শান্তনুর ফ্লাটের চাবি খুঁজে না পেয়ে চাবি ভাঙার লোক নিয়ে আসা হয় ।
শান্তনু ও তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কার নামে যে একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে, সেগুলিতে তল্লাশি চালানো হয় । কিছু নথিপত্র ও টাকা আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হয় । চুঁচুড়ার জগুদাস পাড়ায় একটি ফ্ল্যাট, ব্যান্ডেলে নিবেদিতা পার্কের বাড়ি, বলাগড়ের চাদরায় রিসর্ট ও জিরাট বাস স্ট্যান্ডে থাকা ধাবা-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালান আধিকারিকরা । এর জন্য ইডির একাধিক টিম এদিন হুগলিতে হাজির হয়েছিল ৷
শান্তনু ঘনিষ্ঠ সুপ্রতিম ঘোষ ওরফে আকাশকে ইডি আধিকারিকরা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন ৷ তাঁকেও এই দুর্নীতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে খবর ৷ শান্তনুর রিসোর্টেই আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানা গিয়েছে । আকাশ জিরাট কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করেন । শান্তনুর ছায়াসঙ্গী হওয়ার কারণে তাঁর কাছ থেকে গুরুত্ব তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা ৷
জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে 11টার সময় সুপ্রতিম ঘোষ ওরফে আকাশের বাড়িতে আসেন ইডির আধিকারিকরা ৷ আকাশ কোথায় জানতে চান ৷ আকাশ সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না ৷ তাঁকে বাড়িতে ডেকে পাঠানোর কথা বলা হয় ৷ আকাশ এলে তাঁকে নিয়ে চলে যান তদন্তকারীরা ৷
প্রশ্ন উঠছে, আকাশের চাকরির ক্ষেত্রেও কি দুর্নীতি হয়েছে ? আকাশের অবশ্য দাবি তিনি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন ৷ তবে শান্তনুর সঙ্গে পরিচয়ের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন ৷ তাঁর বাবা দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘আকাশ তৃণমূল করে । শান্তনুর সঙ্গে এলাকায় দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল । তিন চার বছর কাজ পেয়েছে আকাশ । ইডি অফিসাররা আকাশের খোঁজ করছিলেন ৷ ফোন করি ।’’
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, 27 বিঘা জমি উপর তৈরি শান্তনুর ওই রিসর্ট । জমিদাতাদের অভিযোগ, তাঁদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কম দামে জমি নেওয়া হয়েছে । এলাকায় শান্তনু ও তাঁর দলবল আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল ।
এই নিয়ে বিজেপির হুগলি মণ্ডলের সভাপতি রাকেশ যাদব বলেন, ‘‘এটা শান্তনুর একার কাজ নয় । শান্তনুর মতো অনেক নেতা আছেন, যাঁরা কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন । ইডি যদি চেষ্টা করে যাঁরা অল্পদিনে আখের গুছিয়েছেন, তাঁদের খুঁজের পাওয়া যাবে । এর মতো অনেক নেতা আছেন । গরিব মানুষকে পাঁচশো টাকা দেখাচ্ছে আর নিজেরা পাঁচশো কোটি টাকা করেছে । আমরা চাই দোষীদের শাস্তি হোক ।’’