সিঙ্গুর, 2 জুলাই: শুধু ভোটের সময় কেন? গ্রামবাসীদের প্রশ্নের মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। এলাকা উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে পালটা রাজ্যের শাসকদলের ঘাড়ে দায় চাপালেন লকেট ৷ সাংসদকে কটাক্ষ করতে ছাড়ল না তৃণমূলও ।
রবিবার হুগলির সিঙ্গুরের একাধিক বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে গ্রামে গ্রামে প্রচার অভিযান চালান লকেট চট্টোপাধ্যায়। আর সিঙ্গুরের আথালিয়া গ্রামে লকেট পৌঁছতেই জড়ো হন গ্রামের সাধারণ মানুষ। গ্রামবাসীদের অভিযোগও শুনছিলেন সাংসদ। গ্রামের মানুষের অভিয়োগ, এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা বার্ধক্য ভাতা পাননি, অনেকে সরকারি আবাস যোজনার ঘরও পাননি ৷ এদিন সাংসদকে সামনে পেয়ে সেই ক্ষোভের কথাই তাঁর সামনে উজাড় করে দিতে দেখা যায় গ্রামের মানুষকে ৷ যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনার পর, পালটা রাজ্যের শাসকদলের ঘাড়ে দোষ চাপান লকেট ৷
এদিন সাংসদের সামনেই গ্রামের প্রবীণ এক ব্যক্তি বলেন, "ভোটের সময় এসে বললে হবে না ৷ আমার বয়স হয়েছে, লেখা পড়া জানি না ৷ আগে থেকে এসব খোঁজ খবর নিতে হয় ৷ শুধু ভোটের সময় বললে হয় না।" উত্তরে লকেট বলেন, "এখন রাজ্যে তৃণমূল সরকার আছে ৷" তবে সাংসদের এই যুক্তি মানতে রাজি হননি ওই বৃদ্ধ ৷ লকেটকে পালটা বৃদ্ধ জানান, তৃণমূল সরকার চালাক বা বিজেপি, সিপিএম ৷ তা তারা দেখতে চান না ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি আবাস যোজনায় ঘর পাননি, বার্ধক্য ভাতা পান না ৷ এছাড়াও বহু সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এলাকার বহু মানুষ।
লকেট গ্ৰামবাসীদের ক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন , "এটা ওদের স্বাভাবিক। ওরা ভাবছে সাংসদ আছে সব হয়ে যাবে। কিন্তু তারা জানে না সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্য সরকারের হাত দিয়ে আসে। তারা পাচ্ছে না এবং তাদের ভুল বোঝান হচ্ছে । যদিও তাদের বোঝানো আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে ৷ যতক্ষণ না আমাদের সরকার আসছে ততক্ষণ আমরা যারা সাংসদ আছি কাজ করতে পারব না।" সাংসদ আরও জানান, গ্রামবাসীদের ক্ষোভ আদতে বিজেপির উপর নয়। ক্ষোভ আসলে এখানে কোনও উন্নয়ন হয়নি বলে। তাঁর কথায়, "এখানে একটা লাইট লাগানোর জন্য অনেক লড়াই করতে হয় ৷ গ্ৰামবাসীরা তা জানে না।।"
আরও পড়ুন: অজিতের 'পাওয়ার' বদলে ধাক্কা বিরোধী জোটে ! উচ্ছ্বসিত বিজেপি
এ বিষয়ে সিঙ্গুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গোবিন্দ ধারা বলেন, "লোকসভা ভোটের আগে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কিন্তু দু-একটা লাইট ছাড়া কোনও কিছুই তিনি করেননি। তৃণমূল সদস্যরা কাজ করেনি একথা কেউ বলতে পারবে না ৷ উন্নয়ন যথেষ্টই হয়েছে। ঘর না পাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয় ৷ আর বার্ধক্য ভাতা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার তারাও কোনও টাকা দেয়নি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব তহবিল থেকে সেই টাকা দেবে বলে ঠিক করেছেন তার জন্যই অনেক লিস্ট এন্ট্রি হয়ে আছে ভোট মিটলেই তারা টাকা পাবে। তাছাড়া সাড়ে চার বছর হলো উনি জিতেছেন সাধারণ মানুষের তিনি কোন কথাবার্তা এতদিন শোনেননি ৷ তাই সাধারণ মানুষ তো তাদের ক্ষোভের কথা বলবেনই।"