পাণ্ডুয়া, 16 অগস্ট: সংস্কৃতে মন্ত্রোচ্চারণ থেকে মালাবদল কিংবা সিঁদুর দান, বাদ গেল না কিছুই ৷ হিন্দু শাস্ত্র ও বাঙালি রীতি-রেওয়াজ মেনে একসাথে ঘর বাঁধার অঙ্গীকার করলেন পাণ্ডুয়ার কুন্তল ভট্টাচার্য ও ফ্রান্সের প্যাট্রিসিয়া ব্যারোটা ৷ সোমবার রাতে পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় কালীবাড়িতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন তাঁরা (Bengali Man Marriage with French Woman) ৷
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় পরস্পরের সঙ্গে চেনা-পরিচয় হয় কুন্তল ও প্যাট্রিসিয়ার ৷ এঁদের মধ্য়ে প্রথমজন একেবারেই আটপৌড়ে বাঙালি ৷ আর দ্বিতীয় জন ফরাসি মেম ৷ যদিও হুগলির (Hooghly) সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক নতুন কিছু নয় ৷ একটা সময় এই হুগলির চন্দনগরেই উপনিবেশ গড়েছিলেন ফরাসি বণিকরা ৷ আর এবার সেই ফরাসি মুলুক থেকেই ঘর বাঁধতে বাংলায় এলেন প্যাট্রিসিয়া ৷
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine Marry in Himachal: হিমাচলে এক হল রাশিয়া-ইউক্রেন, যুদ্ধের মাঝে 'আশ্রয়' ভারত
কুন্তলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হওয়ার পর বহুবার ভিডিয়ো চ্যাটে প্যাট্রিসিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি ৷ সেই থেকেই শুরু বন্ধুত্ব, প্রেম ৷ কয়েক মাস যেতে না যেতেই দু'জন বুঝতে পারেন, তাঁরা আসলে একে-অপরের সবথেকে কাছের, সবথেকে প্রিয় বন্ধু হতে পারেন ৷ এরপরই ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন প্যাট্রিসিয়া ৷ তাঁকে সঙ্গে নিয়ে কখনও কলকাতা, কখনও মায়াপুর ঘুরে বেড়ান কুন্তল ৷ যত সময় এগিয়েছে, দু'জন দু'জনের আরও কাছে এসেছেন ৷ তার জেরেই বিয়ের সিদ্ধান্ত ৷
হিন্দু ঘরের বিবাহিতাদের সাজ মুগ্ধ করেছে প্যাট্রিসিয়াকে ৷ বিশেষ করে হিন্দু সধবাদের সিঁথিতে থাকা 'রেড লাইন' আর কপালের 'রেড ডট' তাঁর খুব প্রিয় ৷ পরে প্যাট্রিসিয়া জানতে পারেন, সিঁথিতে থাকা ওই লাল রঙের গুঁড়োকে সিঁদুর বলে ৷ বাঙালি বধূরা কপালে সিঁদুরের টিপও পরেন ৷ কেউ কেউ আবার কুমকুম দিয়ে কপালে টিপ আঁকেন ৷ তখনই প্যাট্রিসিয়া ঠিক করে ফেলেন, তিনি বিয়ে করবেন হিন্দু শাস্ত্র এবং বাঙালিদের রীতি মেনে ৷
সোমবার রাতে পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় কালীবাড়িতে যে প্যাট্রিসিয়ার দেখা মিলল, তাঁকে দেখে যত না ফরাসি মনে হবে, তার থেকে বেশি বাঙালি মনে হওয়াই স্বাভাবিক ৷ তাঁর পরনে ছিল লাল বেনারসী ৷ সঙ্গে মানানসই লাল ব্লাউজ, কানে বড়, ঝোলা দুল ৷ মাথায় শোলার মুকুট ৷ কপালে সিঁদুরের ছোট লাল টিপ ৷ বিয়ের পর তাঁর সিঁথিতে সিঁদুরের 'রেড লাইন'-ও পরিয়ে দেন কুন্তল ৷ জানান, বিদেশিনী প্রেমিকাকে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে পেয়ে তিনি খুব খুশি ৷ প্য়াট্রিসিয়া মুখে কোনও কথা না বললেও খুশিতে ঝলমল করছিলেন তিনিও ৷