হুগলি, 26 মার্চ : হুগলির পেয়ারাপুরের জঙ্গল রোড ৷ চারিদিক ফাঁকা ৷ রাস্তার দু'পাশে শুধু বিঘার পর বিঘা জমি ৷ জমিগুলিতে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয় ৷ ভেন্ডি, পেঁয়াজ , আলু কি না চাষ হয় ৷ কিন্তু, এই সবজি চাষের আড়ালে রমরমিয়ে চলছে নিষিদ্ধ পোস্ত চাষ ৷ চাষিদের দাবি, জলের সমস্যার জন্য সেরকমভাবে চাষ হচ্ছে না ৷ তাই, বাধ্য হয়ে তারা কিছু কিছু অংশে পোস্ত চাষ করছেন ৷ অন্যদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদলের মদতেই এই চাষ হচ্ছে ৷
পোস্ত চাষ সাধারণত নিষিদ্ধ ৷ কারণ, এর থেকে আফিম তৈরি হয় ৷ তাই পোস্ত চাষ করার জন্য অনুমতি নিতে হয় ৷ পেয়ারাপুরের এই চাষিরা তা ভালমতোই জানেন ৷ কিন্তু, খানিকটা বাধ্য হয়েই এই চাষ করছেন তাঁরা ৷ কারণ, জলের অভাবে অন্য সবজির চাষ হচ্ছে না ৷ অন্যদিকে, বিরোধীরা অভিযোগ, এই পোস্ত চাষের মাধ্যমে আফিমের কারবার চলছে ৷ এর পিছনে তারা দায়ী করেছে শাসকদলকে ৷ অভিযোগ, শাসকদলের মদতে নিষিদ্ধ পোস্ত চাষ চলছে ৷
কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘এখানে জলের সমস্যার কারণে চাষের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চাষিদের । এর আগে আমি জলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম ৷ ডিপ টিউবিয়াল বসিয়ে দিয়েছিলাম ৷ কিন্তু, তৃণমূল সরকার এসে সব কিছু তুলে দিল ৷ বিক্রি করে দিল ৷ এখন আর জল নেই ৷ চাষও হচ্ছে না ৷ ফলে চাষের জমিগুলি নষ্ট হচ্ছে ৷ তাই ওঁরা একটা বিকল্প চাষের ব্যবস্থা করছে ৷ যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ৷ কয়েকজন তোলাবাজ পোস্ত চাষ করাচ্ছে । প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই । উপরন্তু, প্রশাসন ও শাসকদলের মদতে বিকল্প এই চাষ বেছে নিচ্ছেন চাষিরা । প্রশাসনের এটা দেখা উচিত ।’’
চাঁপদানির বিজেপি প্রার্থী দিলীপ সিং বলেন, ‘‘সরকারি অনুমতি ছাড়া এই চাষ হয় না । আফিম চাষ হচ্ছ ৷ চাষিদের দিয়ে চাষ করিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা টাকা নিচ্ছেন । আমরা নির্বাচন কমিশনে বিষয়টি জানাব । তদন্তের দাবি জানাব ৷
আরও পড়ুন, চা শ্রমিকদের 350 টাকা মজুরির প্রতিশ্রুতি অমিতের, অসম্ভব বললেন কল্যণী
তৃণমূলের দাবি, এই চাষের বিষয়ে তাদের কিছুই জানা নেই ৷ বিরোধীদের অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন ৷ বৈদ্যবাটি পৌরসভার প্রশাসক ও তৃণমূলের চাঁপদানি কেন্দ্রের প্রার্থী অরিন্দম গুঁই বলেন, ‘‘ওখানে যে পোস্ত ও আফিম চাষ হচ্ছে তা আমাদের জানা ছিল না । বিরোধীরা অনেক কথা বলেন ৷ আমাদের তরফে কোনও মদত দেওয়া হয় না । গরিব চাষিরা চাষ করছেন । তবে চাষের জলের সমস্যা থাকায় ওখানে খালের সংস্কার করা হচ্ছে । আমরা কোনওদিন পোস্ত চাষ ওখানে দেখিনি ৷ বিষয়টি অবশ্যই প্রশাসনের নজরে আনব ।’’