হুগলি, 28 অগস্ট: জমিদারি শেষ হয়ে গেলেও জমিদার বাড়ির দুর্গা পুজো এখনও চলে আসছে । তবে জৌলুসহীন ৷ জমিদার বিহারীলাল মুখোপাধ্যায় ছিলেন নিঃসন্তান ৷ ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরামর্শে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্র জন্য দান করে গিয়েছিলেন। তাঁর অবর্তমানে এখনও দুর্গা পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো ও দোল উৎসব হয় বৈঁচির বিএল স্কুলে (BL School Durga Puja)।
বিহারীলাল মুখোপাধ্যায়ের বাবা ঠাকুরদাস মুখোপাধ্যায় এই দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন । পুজো শুরু হয় প্রায় 186 বছর আগে । সেই থেকেই আজও নিষ্ঠার সঙ্গে এই পুজো হয়ে আসছে । পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে পুজোর আয়োজনে ততটা চাকচিক্য থাকে না বটে পুরনো প্রথা মেনে আজও একচালা দুর্গা মূর্তি তৈরি করা হয়। সিংহবাহিনীর লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও মহিষাসুর - সবাই একসঙ্গে । টানা চোখের বাংলা মুখের আদলে এই মূর্তি হয়। মহিষাসুরের গায়ের রঙ এখানে সবুজ ৷ মূল বেদীতে বসানো হয় দেবীকে । ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত বৈদিক মতে মা দুর্গার পুজো হয়।
একসময়ে দুর্গাপূজো, দোল ও জগদ্ধাত্রী পুজোয় প্রচুর লোকের সমাগম হতো স্কুল চত্বরে। তবে কালের নিয়মে তা বদলে গেছে । নবমীর দিন গ্রামের প্রচুর মানুষ অঞ্জলি দিতে আসতেন আগে। এখন বিভিন্ন জায়গায় বারোয়ারি দুর্গা পুজো হওয়ায় তা ভাগ হয়ে গিয়েছে। আগে স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ড থেকেই এই পুজো চলত। তবে এখন আর সেভাবে অনুদান আসে না। তবে আজও নিষ্ঠার সঙ্গেই পুজো চলে আসছে।
আরও পড়ুন : না থেকেও রইলেন, একডালিয়ার খুঁটিপুজোয় সুব্রত
গ্রামবাসী তথা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভারতবর্ষের কোনও স্কুলে দুর্গাপূজা হয় কি না তা আমার জানা নেই । তবে বিএল স্কুলে দুর্গা পুজো হয়। ছোটবেলা থেকেই এই পুজো দেখে আসছি। তবে আগে যে পুজোর ঐতিহ্য ছিল তা এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। শুধু তাই নয় দুর্গা মন্দিরেরও অবস্থাও বেশ খারাপ। মালিক তাঁর সমস্ত সম্পত্তি সরকারকে দান করে গিয়েছেন। যদি সরকার একটু দৃষ্টি দেয় তাহলে ভালো হয়।’’