সিঙ্গুর, 9 মে : বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনার বোর্ড থাকলেও কাজ হয়নি । দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত সিঙ্গুর ব্লকের দুটি পঞ্চায়েতের মানুষ (Singur Road Problem)। সারা দিনে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন এই রাস্তা দিয়ে । তিন বছর আগে সড়ক যোজনার বোর্ড লাগিয়ে কাজ শুরু হয় । তারপর কোনও এক অজ্ঞাত কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায় । ফের বোর্ড মুছে আবারও কোটি টাকার কাজের বরাদ্দ করলেও এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি । কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলতে হচ্ছে বিঘাটী ও বাগডাঙ্গা-ছিনামোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষকে । কবে এই রাস্তার জট খুলবে বুঝতে পারছে না গ্রামবাসী । তবে জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, টেন্ডার করে কলকাতার এক কোম্পানিকে বরাদ দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু তারা কাজ করেনি । আবারও কথা হয়েছে শীঘ্রই কাজ হবে ।
আরও পড়ুন : Dilapidated Road : 34 বছরেও হয়নি রাস্তা, এবার ভোট বয়কটের হুমকি গ্রামবাসীদের
সিঙ্গুর ব্লকের বাগডাঙ্গা-ছিনামোড় পঞ্চায়েতের নান্দা দামাতির ধার থেকে বিঘাটী পঞ্চায়েতের পালাড়া পাতকুঁয়ো তলা পর্যন্ত এই রাস্তাটি । কৃষিজাত পণ্য থেকে সমস্ত ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা । প্রায় 2.9 কিলোমিটার এই কাঁচা রাস্তা । জেলা পরিষদের অধীনে থাকা রাস্তাটি 1 কোটি 88 লক্ষ টাকা খরচ করে সংস্কার করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল 2010 মার্চ মাস থেকে । রাস্তা সংস্কারের জন্য আগে ফলকও লাগানো হয় । এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের আর্থিক সহযোগিতায় কাজটি হওয়ার কথা ছিল । যে ঠিকাদার সংস্থা ওই সময়ে কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তারা রাস্তার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি আনলেও কাজ শেষ না করেই চলে যায় ৷ পরে আবারও টাকার বরাদ্দ কমিয়ে বোর্ড লেখা হয় ওই ঠিকাদারের নামে । কিন্তু বোর্ড লেখা থাকলেও আজও রাস্তার কাজ হয়নি । 25-30 হাজার মানুষকে এখনও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে । বর্ষার সময় আরও সমস্যায় পড়তে হবে সকলকেই । স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদ সব জেনেও বসে আছে ।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব সাঁতরা বলেন, "রাস্তার টাকার অনুমোদন হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত রাস্তা হয়নি । মাঝে একবার যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ শুরু হলেও মাঝপথে তা বন্ধ হয়ে যায় । কিছুটা রাস্তার জমি নিয়েও সমস্যা ছিল । তবে কি কারণে রাস্তা বন্ধ হল বুঝতে পারছি না ।"
আরও পড়ুন : Malda road problem: বেহাল রাস্তা, কালভার্টে মরণফাঁদ ! মালদায় পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের পথে গ্রামবাসীরা
সিঙ্গুরের আনন্দনগর গাণ্ডারপুকুর এলাকার বাসিন্দা অসিত মিদ্যা বলেন, "বহু দিন ধরে রাস্তার বোর্ড লাগানো সত্ত্বেও রাস্তা হচ্ছে না । ভদ্রেশ্বর স্টেশন বাজারে ব্যবসা করতে গিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি ।"
বাগডাঙ্গা-ছিনামোড় পঞ্চায়েতের প্রধান চন্দ্রনাথ দাস বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্দ করেছিল । কিন্তু ঠিকাদার সংস্থার সমস্যার জন্য কাজ করেনি । মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা এই রাস্তা । সরকারি দফতরের তরফে আবার নতুন করে রাস্তা তৈরি চিন্তাভাবনা চলছে । সিঙ্গুর বিধানসভার বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্না নতুন করে এই রাস্তা তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন । আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই তা সম্পন্ন হবে ।"
হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, "বাগডাঙ্গা-ছিনামোড় থেকে যে রাস্তার দায়িত্ব ঠিকাদার নিয়েছিল । সেটা তারা সম্পন্ন করেনি । এরকম অর্ধসমাপ্ত বেশ কিছু রাস্তা রয়েছে হুগলি জেলায় । গ্রাম উন্নয়ন দফতর ওই সংস্থাকে ব্ল্যাকলিস্টেড করেছে । স্টেট ফান্ড থেকে আবার নতুন করে এই রাস্তাগুলি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে । ঠিকাদার সংস্থার কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে । যত শীঘ্রই সম্ভব এই রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে ।"