চুঁচুড়া, 20 অগাস্ট : মিড ডে মিলে দেওয়া হয়েছিল নুন-ভাত ৷ সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দিরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন অনেকেই ৷ সমালোচনা শুরু হতেই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন ৷ যার পরিণতি আজ স্কুলে ছাত্রীদের মিড ডে মিলের পাতে পড়ল ভাত, ডিম ৷ আজ স্থানীয় কাউন্সিলর তথা স্কুল পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে স্কুলে পৌঁছায় ডিম, মশলা ৷
মিড ডে মিলে দুর্নীতি নিয়ে গতকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দির ৷ গতকাল এই নিয়ে সরব হন BJP সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন ৷ এরপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আজ স্কুলে যান পশ্চিমবঙ্গ চাইল্ড রাইটস কমিশনের প্রতিনিধিরা ও চুঁচুড়ার সদর SDO অরিন্দম বিশ্বাস ৷ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তাঁরা বলেন, "যতদিন না এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়, ততদিন পর্যন্ত স্কুলে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করবে জেলা প্রশাসন ৷"
সভাপতির তত্ত্বাবধানেই মিড ডে মিলে দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ তুলে আজ স্কুলে গৌরীকান্তবাবুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্কুলের শিক্ষিকারা ৷ তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষিকাদের সমর্থন ছাড়াই টিচার ইন চার্জ নির্বাচন হয়েছিল ৷ বর্তমান টিচার ইন চার্জ পূর্বা মুখোপাধ্যায় ও শমিতা কুশারি তাঁর স্নেহধন্য ছিল ৷ তাদের তত্ত্বাবধানেই এ সব হয়েছে ৷ শিক্ষিকা দীপান্বিতা ঘোষ বলেন, "স্কুল থেকে অনেক টাকা চুরি হয়েছে ৷ সেটা সভাপতির সামনে আনা উচিত ছিল ৷ যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের উনি সুরক্ষা দিচ্ছেন ৷" যদিও তাঁদের অভিযোগ অস্বীকার করে গৌরীকান্তবাবু বলেন, "স্কুলের শিক্ষিকারা ABTA-এর সদস্য ৷ ওরা BJP-র সঙ্গে জোট করে স্কুলে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করছেন ।"
এই সংক্রান্ত আরও খবর : 5 হাজার ডিমের হদিশ নেই, বস্তা বস্তা চাল হাপিশ ; ছাত্রীরা খায় নুন-ভাত !
হুগলির জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, "হুগলি চুঁচুড়া পৌরসভা এলাকায় মিড ডে মিল কেমন চলছে দেখার জন্য 100 স্কুলে রান্নাঘর আর খাওয়ার জায়গায় CCTV ক্যামেরা লাগানো হবে ৷ পরে স্কুলের অন্য জায়গাগুলিতেও CCTV ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে ৷ 300 জন অফিসার আগামীকাল থেকে জেলার স্কুলগুলিতে মিড ডে মিলের অবস্থা খতিয়ে দেখবেন । চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দিরে দুর্নীতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত আমরা 2 জন শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করেছি । হুগলির DI-কে আমরা স্কুনে নতুন টিচার ইন চার্জ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করব ।"
এবিষয়ে হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এতদিন প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসেছিল কেন ? এই বিষয়টি আগেও তো করা যেত । যখন চোর ধরা পড়বে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে । চেয়ারম্যান পদে যিনি বসে আছেন তিনি এতদিন কেন বিষয়টি দেখেননি । মানুষের কাছে যখন পুরো বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেছে তখন নিজেদের মান বাঁচাতে দুই শিক্ষিকাকে সরিয়ে দিয়েছেন । এরপর পিছনে আরও বড় বড় মাথা রয়েছে ৷ এই দুর্নীতির সম্পূর্ণ তদন্ত হওয়া চাই । বাংলার বেশিরভাগ স্কুলে এই ধরনের গাফিলতি আছে। শুধু হুগলি নয় পুরো বাংলার সব স্কুলে তদন্ত হোক । দরকার হলে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তদন্ত করুক । অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে ।"