চন্দননগর, 8 ফেব্রুয়ারি: বিনা অক্সিজেনে ধৌলাগিরি ও এভারেস্টের পর বিশ্বের পঞ্চম ও দশম পর্বতশৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে পাড়ি দিচ্ছেন চন্দননগরের পিয়ালী বসাক। এবছর তাঁর টার্গেট বিনা অক্সিজেনেই মাকালু ও অন্নপূর্ণা জয়। পৃথিবীর দশম উচ্চতম শৃঙ্গ অন্নপূর্ণা (8091 মিটার/26800 ফিট) এবং পঞ্চম উচ্চতম মাকালু আরোহণে আগামী 7 মার্চ অভিযান শুরু করতে চলেছেন পিয়ালী (Piyali is going to Conquer Makalu and Annapurna Peaks Without Oxygen) ৷ ইতিমধ্যেই সামিট করার অনুমতি পত্র চলে এসেছে তাঁর কাছে।
7 মার্চ যাত্রা শুরু করবেন তিনি। যদিও তাঁর মাথার উপর বিপুল টাকা ঋণের বোঝা। তারপরও তিনি এগিয়ে যেতে চান। এর আগে বহু মানুষ ও সংস্থা আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন তিনি। এবারে তাঁর আশা যদি কোনও সংস্থা, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার পিয়ালীর এই পর্বতারোহণে এগিয়ে আসেন তাহলে অনেকটাই সুবিধা হবে ৷ এর মধ্যেই বেশ কিছু সংস্থার কাছে আবেদন করেছেন তিনি। কিন্তু কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে চিন্তিত পরিবার।
এর আগে 2021-এ বিনা অক্সিজেনের ধৌলাগিরি পর্বতারোহণ করেছেন তিনি ৷ 2022 সালে বিনা অক্সিজেন এভারেস্টের চূড়ায়ে পৌঁছেছিলেন তিনি। যদিও 8 হাজার 490 মিটারের পর তুষার ঝড়ের কারণে সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন নিতে বাধ্য হয়েছিলেন বাঙালি এই পর্বতারোহী। এরপর 2022 অক্টোবর-নভেম্বরে পৃথিবীর ষষ্ঠতম শৃঙ্গ চৌ ইউ গিয়েছিলেন তিনি ৷ যদিও তুষারঝড়ের কারণে ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। যদিও আগে থেকেই সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেই বিনা অক্সিজেনের অন্নপূর্ণা-সহ আরও বেশকিছু শৃঙ্গ জয় করার স্বপ্ন দেখছিল পিয়ালী। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কাছে পিয়ালী ও তাঁর পরিবারের একটাই আবেদন, যাতে আর্থিকভাবে সাহায্য করা হয় পিয়ালীকে ৷
আরও পড়ুন: অক্সিজেনে ছাড়া এভারেস্ট জয় করে ঘরে ফিরলেন পিয়ালী
চন্দননগর কাঁটাপুকুরের বাসিন্দা পিয়ালী বসাক বাবার হাত ধরে প্রথমে পাহাড়ে ঘুরতে যান। সেখান থেকেই পাহাড়ে চড়ার নেশা শুরু ৷ পিয়ালী বসাক বলেন, "অর্থ ছাড়া তো এগোতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মানুষের প্রতি আমি খুবই কৃতজ্ঞ। মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। কোনও বড় বেসরকারি সংস্থা ও সরকারি সাহায্য ছাড়া এত বড় অভিযান করা যায় না। এভারেস্টের ক্ষেত্রে আমি অনেকটাই সাহায্য পেয়েছিলাম রোটারি-সহ চন্দননগর ও অন্যান্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। এবার যাতে সরকারি সাহায্য পাই, তার বহু চেষ্টা করছি । আশা করছি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার আমার পাশে এসে দাঁড়াবে।"
তিনি আরও বলেন, ওখানে পদে পদে মৃত্যু আর সেই ঝুঁকি নিয়ে আমি যাচ্ছি ৷ যাতে আমি দেশ ও রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করতে পারি। বাবার অসুস্থতা এবং পরিবারের সকলের নামে লক্ষাধিক টাকার লোন নিয়ে শৃঙ্গ জয় করছি। সকলে আমার পাশে দাঁড়ালে আমি অবশ্যই এগিয়ে যাব। আমার সমস্ত অনুমতি পত্র চলে এসেছে। নেপাল সরকার আমার পাশে কিছুটা হলেও দাঁড়িয়েছে। তবে শৃঙ্গজয়ের আগে আমাকে সমস্ত টাকা মেটাতে হবে। আমি অবশ্যই চেষ্টা করব যাতে অভিযানের আগে সমস্ত টাকা জোগাড় করতে পারি। যেমন টাকার অভাবে এভারেস্ট জয়ে বিলম্ব হয়েছিল। এবারে চেষ্টা চালাচ্ছি যাতে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে ছাড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারি।"
আরও পড়ুন: পিয়ালিকে তিন লক্ষ টাকা প্রদান মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের