শিলিগুড়ি (দার্জিলিং), 13 ডিসেম্বর: পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনের আগে কি ফের উঠছে পৃথক রাজ্যের (Separate State) দাবি ? আর সেই দাবিকে সামনে রেখে কি ফের একবার পাহাড়ের রাজনীতির (Darjeeling Hill Politics) প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হতে চলেছে ?
এখন এমনটাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে । কারণ, পৃথক রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ফের একবার দু’টি আলাদা শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছে দার্জিলিং ৷ একদিকে, গোর্খাল্যান্ডের (Gorkhaland) দাবিতে বিজেপি ঘনিষ্ঠ সুভাষ ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ (GNLF), অজয় এডওয়ার্ডয়ের (Ajoy Edwards) হামরো পার্টি, বিমল গুরুংয়ের (Bimal Gurung) গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (GJM), অখিল ভারতীয় গোর্খালিগ, গোর্খা পরিসংঘের মতো দল এককাট্টা হতে শুরু করেছে । আর অন্যদিকে রয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) এবং জিটিএর (GTA) শাসকদল অনিত থাপার (Anit Thapa) ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (BGPM) ।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হলেও পৃথক রাজ্যের দাবি তোলা শিবিরে দেখা গিয়েছে একদা বিমল ঘনিষ্ঠ বিনয় তামাংকেও (Binay Tamang) । শুধু তাই নয়, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লির কনভেনশনে যে 25 জনের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাতেও রাখা হয়েছে বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ডকে । যার ফলে পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে ।
মোর্চা নেতা বিমল গুরুং আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে ডিসেম্বরে তিনি দিল্লিতে গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায়ে বৈঠক করবেন । যেখানে গোটা দেশের গোর্খাদের আমন্ত্রণ জানানো হয় । সেই মতোই দিল্লির সেই সম্মেলনে চমক ছিল তৃণমূলের বিনয় তামাংয়ের উপস্থিতি । তিনি কাউকে কিছু না জানিয়েই গুরুং-এর সভায় হাজির হন বলে জানা গিয়েছে ।
সেখানে গিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, "গোর্খাদের জন্য এখানে এসেছি । আমিও গোর্খা ৷ তাই আমিও গোর্খাদের ভালোই চাই ।" এই বিষয়ে পার্বত্য তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী বলেন, "এখনই কিছু বলার নেই । আমরা আলোচনায় বসি, তারপর যা বলার বলব ।" পাহাড়ের অন্যান্য তৃণমূল নেতাও কথা বলতে চাননি । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, পাহাড়ের বিষয়টা কলকাতা দেখে৷ তারাই যা বলার বলবে । কিন্তু বিনয়ের এহেন আচরণে খানিকটা বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ।
অন্যদিকে অজয় এডওয়ার্ড বলেন, "পাহাড়ের স্বার্থে গোর্খাল্যান্ডের জন্য আমি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি । আমিও গোর্খাল্যান্ডের সমর্থক ।" এদিকে বিমল গুরুং বলেন, "কমিটি গঠন করা হয়েছে । আমরা ঠিক করব কিভাবে গোর্খাল্যান্ডের জন্য আন্দোলন হবে । তবে পাহাড়ের ক্ষতি করে কিছু করা হবে না ।"
অন্যদিকে, ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মুখপাত্র এসপি শর্মা বলেন, "বিমল গুরুং পাহাড়ে অস্তিত্ব হারিয়েছেন । অজয় এডওয়ার্ডও মুছে গিয়েছেন । এখন দু’জনেই একত্রিত হয়ে পায়ের তলায় হারানো মাটি খোঁজার চেষ্টা করছেন । তারা গোর্খাল্যান্ডের জন্য নয়, তারা পাহাড় থেকে কিভাবে অনিত থাপাকে সরানো যায়, তার জন্য এসব করছেন ।"
আরও পড়ুন: দাবি সেই পৃথক গোর্খাল্যান্ড, বিমল গুরুং কি বিজেপি মুখী ?