শিলিগুড়ি, 1 ডিসেম্বর: "মানসিক শক্তিতে ভর করেই আমরা সেই টানেলে বেঁচে ছিলাম ৷ দশ দিন টানা মুড়ি খেয়ে ছিলাম । অবসর সময়ে মাটিতে ছবি একে লুডো খেলেছেন কেউ কেউ ।" উত্তরকাশী থেকে ফিরে এমন অভিজ্ঞতার কথাই শোনালেন সিল্কিয়ারার টানেলে আটকে পরা শ্রমিক মানিক তালুকদার । একই সঙ্গে এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, এই রাজ্যে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ৷
মানিক তালুকদার কোচবিহারের বাসিন্দা । শুক্রবার বিমানে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি । বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় । সেখান থেকে সড়কপথে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি ৷ এদিন বাড়িতে রওনা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মানিক তালুকদার বলেন,"সেরকম চিন্তার কোনও কারণ ছিল না । কারণ ভিতরে দু'কিলোমিটারের মতো জায়গা ছিল । তবে বাড়ির জন্য চিন্তা হচ্ছিল । আমার স্ত্রী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত । টানেলে আটকে পরার আগের দিন ফোনে কথা হয় । তারপর আর কথা হয়নি । দশদিন পরে খাবারের জন্য যে ছয় ইঞ্চির পাইপ ঢুকিয়েছিল তখন ফোনে কথা হয় । কিন্তু খাবারের একটু কষ্ট হয়েছিল । এক কেজি মুড়ি 41 জনে ভাগ করে খেয়েছি । তবে আমাদের উদ্ধারকাজের জন্য সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। আমরাও আশ্বস্ত হয়েছিলাম ৷"
তিনি আরও জানান, সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকরা উদ্ধারকারীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন আস্তে আস্তে কাজ করার, কারণ তাড়াহুড়ো করলে আরও বড় দুর্নার আশঙ্কা ছিল ৷ তবে এই ঘটনার পর তাঁর যে আর বাইরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই, তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এখানে কাজের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছেন মানিক তালুকদার ৷ তিনি বলেন, "এখানে বেতন কম মেলে । সংসার চালাতে তাই বাইরে যেতে হয় । আমাকে শ্রমিক হিসেবে ওখানে যা বেতন দেয় তা এখানে মিলবে না। তাও আমার আবেদন, আমাকে যদি এখানে কোনও চাকরি দেওয়া হয় তবে আমি আর বাইরে কাজ করতে যাব না ।" উল্লেখ্য, গত 12 নভেম্বর উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারায় নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন 41 জন শ্রমিক ৷ তাঁদের মধ্যে ছিলেন মানিক তালুকদার-সহ বাংলার 3 শ্রমিকও ৷ 17 দিন আটকে আকার পর মঙ্গলবার তাঁদের উদ্ধার করা হয় ওই টানেল থেকে ৷
আরও পড়ুন: