দার্জিলিং, 15 মে: রাতে দেরি করে বাড়ি ফেরায় দাদা বকুনি দিয়েছিল। সেই অভিমানে মহানন্দা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করল ভাই । রবিবার রাতে মর্মান্তিক ওই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকে। কিশোরের ওই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় থমথমে এলাকা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম রূপম রায় (17)। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরের রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা রূপম বিধাননগর সন্তোষিনী বিদ্যাচক্র হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের ছাত্র ছিল সে। চলতি বছরেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে দেরি করে ঘরে ফেরায় বকাবকি করে দাদা। রাত ন'টার দিকে অভিমানে ঘর ছাড়ে রূপম। এরপর রাত 12টা নাগাদ বন্ধুদের ফোন করে জানায় সে আত্মহত্যা করছে ৷ তার মা'কে যেন দেখে রাখা হয় ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখেই বন্ধুবান্ধবরা রূপমের বাড়িতে খবর দেয়। স্থানীয়রা এলাকায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে ।
মহানন্দা নদীর ধারে রূপমের চটি ও মোবাইল উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা। এরপর রাতেই নদীতে তল্লাশি শুরু চালানো হয়। কিন্তু অন্ধকারের দেহ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি । সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধাননগর থানার পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল । ক্যানেলে কয়েক ঘণ্টা টানা তল্লাশি চালানোর পর রূপমের দেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় তারা । প্রথমে দেহটি বিধাননগর থানায় ও পরে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় ।
এই বিষয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্য পরিমল সিংহ বলেন, "সকালে আমাদের খবর দেয় বিধাননগর থানার পুলিশ । আমরা পৌঁছে নদীতে তল্লাশি শুরু করি । তারপর ওই কিশোরের দেহ উদ্ধার হয়।" স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন বিশ্বাসের কথায়, "রাতেও একবার খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল । কিন্তু দেহ মেলেনি । সকালে ফের তল্লাশি চালালে দেহটি উদ্ধার হয়। বাড়িতে দাদার বকাবকিতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।"
মৃতের খুড়তুতো দাদা মিঠুন রায় বলেন, "রাতে দেরি করে বাড়ি ফেরায় দাদা বকাবকি করে । তারপর রাতেই ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। 12টা নাগাদ খবর আসে আত্মহত্যা করেছে বলে। এরপর আমরা খোঁজ শুরু করি। সকালে দেহ নদী থেকে উদ্ধার হয় ৷ দাদার বকাতে যে এরকম ঘটনা ঘটবে তার ধারণাই ছিল না।"
আরও পড়ুন : ‘আত্মহত্যা নয়’, বার্তা দিতে বাইক নিয়ে দেশভ্রমণ অন্ধ্রের যুবকের