শিলিগুড়ি, ৭ মার্চ : বকেয়া মেটানোসহ একাধিক দাবিতে ১১ মার্চ থেকে চা পাতা তোলা বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দিল চা শ্রমিকরা। গতকাল চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের তরফ থেকে দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের সামনে ধরনায় বসে চা শ্রমিকরা। তাদের দাবি, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কার্যকর করতে হবে। বন্ধ চা বাগানগুলি খুলতে হবে। বকেয়া বেতন এবং এরিয়ার মেটাতে হবে। এই দাবি দাওয়াগুলি নিয়ে তারা গতকাল রাজ্যের শ্রমকমিশনারের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেয়। এর ফলে ব্যবসায় বিরাট ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছে চা মালিক সংগঠন। তাদের দাবি, এই বিষয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে সময় চেয়ে নেওয়া হলেও তারা তা দিতে চায়নি।
পাওয়া যাচ্ছে না বকেয়া টাকা। মজুরিও চাহিদা অনুযায়ী কম। এই পরিস্থিতিতে চা শ্রমিকরা কাজ বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়ায় ভরা মরশুমে চা ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চা বাগান মালিকরা। তাদের সংগঠন দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ মুখার্জি এবিষয়ে বলেন, "কিছুদিন আগে ১০৫ দিনের বনধের ফলে দার্জিলিঙের এই চা শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের চা পাতা তোলা বন্ধ রাখার হুমকি। মার্চ মাস থেকে দার্জিলিং চায়ের ফার্স্ট ফ্লাশ শুরু। এই চায়ের পুরোটাই অর্থাৎ বছরে উৎপাদিত মোট চায়ের ২০ শতাংশ বিদেশে রপ্তানি হয়। পাতা তোলা বন্ধ থাকলে সেই কাজ ব্যাহত হবে। অর্ডার অনুযায়ী সময়মতো চা রপ্তানি করতে না পারলে অর্ডার বাতিলের আশঙ্কা থাকে।"
সন্দীপ মুখার্জির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দার্জিলিঙে মোট ৮৭টি চা বাগান রয়েছে। সেখানে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা অন্তত ৫০ হাজার। তাদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ চা মালিক শ্রমিকদের এরিয়ার দিয়ে দিয়েছে। বাকি ৫৫ শতাংশ মালিক এখনও দেয়নি। তাঁর দাবি, যাতে ওই ৫৫ শতাংশ চা মালিক যাতে ওই টাকা দিতে পারে সেজন্য তাঁরা সময় চাইছেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা দিতে নারাজ। উলটে ফার্স্ট ফ্লাশ চা এক্সপোর্ট করতে না পারলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন চা মালিকরা।
অন্যদিকে, জয়েন্ট ফোরাম সূত্রে খবর, গতকাল ধরনা কর্মসূচি হয়। আজ থেকে বাগানে বাগানে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হবে। এই কর্মসূচি চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। আর ১১ মার্চ থেকে কাজ বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। যদিও তার আগে বাগান মালিকরা ইতিবাচক সাড়া দিলে কর্মসূচি আন্দোলন স্থগিত রাখা হতে পারে বা কর্মসূচিতে পরিবর্তন হতে পারে বলে জানিয়েছেন জয়েন্ট ফোরামের সদস্য সুনীল রাই।