শিলিগুড়ি, 30 জানুয়ারি : ফের উত্তরের পর্যটনে জোর ধাক্কা । 2 ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিল বাগডোগরা বিমানবন্দরের সমস্ত বাগডোগরা এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন । আজ শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানান সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপি সহ অন্য রাজনৈতিক দল পরিচালিত 7টি গাড়িচালক ও মালিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ 'বাগডোগরা এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন' । যদিও পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ।
ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের ধর্মঘটের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই পর্যটন মহলে চিন্তার ছাপ পড়েছে । বিপাকে পড়তে চলেছে বাগডোগরা বিমানবন্দরে আসা পর্যটকসহ যাত্রীরাও । প্রশাসন ও রাজ্য সরকার যদি ধর্মঘটের পরেও পদক্ষেপ না নেয় তাহলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলবে, হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে 'বাগডোগরা এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন'-র পক্ষ থেকে ।
সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, কোরোনাকালে রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসনের আবেদনে যাত্রী পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল । সেই সময় কোনওরকম আয় হয়নি, গাড়ি মালিক ও চালকরা বিভিন্ন ট্যাক্স ও বিমার টাকা জমা দিতে পারেনি । আনলক পর্যায়ে যাত্রী পরিষেবা চালু হলেও বিভিন্ন ট্যাক্স ও বিমা বকেয়া থাকায় পরিবহন দপ্তর জরিমানা করছে । সেবিষয়ে একাধিকবার পরিবহন দপ্তর, পুলিশ, জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি । এমন কী পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে । তিনি 15 দিনের মধ্যে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন । সেই সময়ও অতিক্রান্ত হয়ে গেছে । সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন : 28 জানুয়ারি থেকে 72 ঘন্টার ট্যাক্সি ধর্মঘট রাজ্যে
এবিষয়ে যৌথ মঞ্চের তরফে পঙ্কজ ঘোষ বলেন, "আমরা আমাদের সমস্যা নিয়ে মন্ত্রী, বিধায়ক থেকে সাংসদ সবার কাছেই সমাধানের জন্য দ্বারস্থ হয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে । রাজ্য সরকার অন্যান্য বিষয়ে কোরোনা আবহের জন্য কর মুকুব এবং ছাড় দিলেও গাড়ি চালকদের জন্য কোনরকম সদর্থক পদক্ষেপ নেয়নি । ফলে বিমা এবং ট্যাক্স বকেয়া পড়ে যাওয়ায় আমাদের মোটা টাকা জরিমানা করা হচ্ছে । এবিষয়ে একাধিকবার রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও কোনও সাড়া মেলেনি । সেজন্যই আমরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।"
আর এক সদস্য রাজীব কুমার এপ্রসঙ্গে বলেন, "আমরা আর কোনও বৈঠকে বসতে চাই না । আমাদের সমস্যার সমাধান না হলে ধর্মঘট চলতে থাকবে । তবে সংগঠনের কোনও সদস্য যদি ধর্মঘটকে সমর্থন না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে । পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠনের সদস্যদের কাছেও আমরা ধর্মঘটকে সমর্থন জানানোর আবেদন করেছি ।"
এবিষয়ে গৌতম দেব বলেন, "'বাগডোগরা এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন'-র বেশ কিছু সমস্যার কথা আমাদের জানিয়েছে । সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে ।" বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে প্রায় দেড় হাজার গাড়ি যাত্রী পরিষেবা দেয় ওই সংগঠন । গোটা উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি পাহাড় ও সিকিমের যাত্রী পরিষেবা চলে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে ।