শিলিগুড়ি, 8 অগস্ট : পাহাড় থেকে সমতল, মাঝেমধ্যেই টানা বৃষ্টিপাত জেলা জুড়ে। যার জেরে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে দার্জিলিং জেলার পাশাপাশি শিলিগুড়িতে। তবে এই বছর উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন।
কারণ যেখানে ডেঙ্গি গত বছর পর্যন্ত শহর এলাকায় বেশি প্রকোপ দেখা দিয়েছিল, এবার সেই ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টো। কারণ এই বছরে শহরের তূলনায় পাহাড় এবং শিলিগুড়ি মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি। যা চিন্তায় ফেলেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে।
ইতিমধ্যে ওই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে এখন থেকে জোরকদমে ময়দানে নামার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, "গত বারের তুলনায় এই বছর ডেঙ্গির প্রকোপ অনেকটাই বৃদ্ধি হয়েছে। এন্টামোলজিস্টদের দিয়ে মশার গতিপ্রকৃতি জানতে সার্ভে করা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন : Black Fungus: শিলিগুড়িতে ফের ব্ল্যাক ফাংগাস আতঙ্ক, মৃত প্রৌঢ়া
শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার বলেন, "ডেঙ্গি নিয়ে কোনও শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না। ভিসিটি শহরজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করছে। জমা জল পরিস্কার না করলে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানাও করা হবে।"
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসেই শিলিগুড়ি পৌরনিগম এলাকা সহ দার্জিলিং জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন 48 জন। যার মধ্যে দার্জিলিংয়ের দুধিয়াতেই একমাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন 28 জন। পাশাপাশি শিলিগুড়ি সংলগ্ন সুকনাতে আক্রান্ত হয়েছেন 8 জন। এছাড়া মহকুমা এলাকার খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া, বাগডোগরার মতো গ্রামীণ এলাকাতেও থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি।
সেই জায়গায় শিলিগুড়ি পৌর এলাকায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র 2 জন। তার মধ্যে একজন 46 নম্বর ওয়ার্ডের এবং আরেকজন দেশবন্ধুপাড়া বাসিন্দা। কিন্তু পাহাড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ আচমকা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থ্য দফতরকে। সেইজন্য জেলা জুড়েই ডেঙ্গির বিরুদ্ধে ময়দানে নেমেছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
আরও পড়ুন : উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে 57 জন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট উত্তীর্ণকে চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ
শিলিগুড়ি পৌরনিগম এলাকায় নির্মীয়মাণ, ফাঁকা বহুতলে বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে পৌরকর্তৃপক্ষ। কোথাও জমা জল দেখতে পেলেই তা পরিস্কার না করলে 1 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। পাশাপাশি নজরদারির জন্য স্পর্শকাতর ওয়ার্ডগুলিতে বাড়ানো হচ্ছে ভেক্টর কন্ট্রোল টিম (VCT)।
বর্তমানে পৌরনিগমে 158 টি ভিসিটি রয়েছে। আরও কিছু ভিসিটি টিম বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাহাড়েও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, শুরু করা হয়েছে মাইকিং। ডেঙ্গি মশার গতিপ্রকৃতি জানতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এন্টামোলজিস্টকে দিয়ে সার্ভে করানো হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।