শিলিগুড়ি, 24 নভেম্বর: উত্তরকাশী টানেল বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে সেভক রংপো রেল প্রকল্পের টানেলে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষার উদ্যোগ নিল রেল কর্তৃপক্ষ । উত্তরকাশীর ঘটনার পরই শুক্রবার শিলিগুড়িতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন সেভক রংপো রেল প্রকল্পের বরাত প্রাপ্ত সংস্থা ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কনসট্রাকশন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড বা ইরকন ও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আধিকারিকরা ।
বৈঠকের পর সেভক রংপোর চার নম্বর টানেলে যে কাজ চলছে, সেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে যান ইরকনের আধিকারিকরা । প্রসঙ্গত, সেভক রংপো প্রকল্পে আটজন শ্রমিক টানেলের কাজের সময় ধসে চাপা পরে মারা যান । ওই ঘটনার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন পরিবেশবিদ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা । সেই উদ্বেগের কথা প্রকাশ করে রাজ্য সরকারকে চিঠিও দেন তাঁরা ।
উত্তরকাশীর ব্রহ্মতাল যমুনেত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা ও ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ায় আটকে পড়ে কর্মরত 41 জন শ্রমিক । তাঁদের মধ্যে তিন জন বাংলার শ্রমিকও রয়েছেন । দু’জন হুগলির এবং এক জন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে । সেই ঘটনার 12 দিন পেরিয়ে গিয়েছে । এখনও উদ্ধার করা যায়নি সুড়ঙ্গের ভিতর আটকে পড়া শ্রমিকদের । সেই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে রেল কর্তৃপক্ষ ।
সূত্রের খবর, এ দিন টানেলে শ্রমিকদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠক । উত্তরকাশীর মতো ঘটনার যাতে কোনোভাবেই পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে । তবে উত্তরকাশীর থেকে অনেক বেশি সুরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রেখেই টানেলের কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে ।
ইরকনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহেন্দর সিং বলেন, "উত্তরকাশীর ঘটনার পর এ দিন আমরা আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছি । সেই বৈঠকে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে । টানেলের কাজের সময় বেশ কিছু প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে । তবে টানেলের জন্য খনন কাজ প্রায় শেষ । ফলে সেভাবে ঝুঁকির কোনও আশঙ্কা নেই ।"
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, "সেবক রংপো রেল প্রকল্পের কাজ ঠিকই চলছে । সেখানে চিন্তার কিছু নেই । শ্রমিক ও পরিবেশ দু’দিকেই নজর রাখা হয়েছে ।"
জানা গিয়েছে, টানেলে যেকোনও ধরনের কাজের সময় ভিডিওগ্রাফি থাকছে । বিশেষ করে টানেলে খনন কাজের সময় টানেলের এক পাশে রাখা হবে এসকেপ রুটের ব্যবস্থা । এতে টানেলে কাজের সময় ধস পড়লেও এসকেপ রুট ব্যবহার করে বাইরে বেরিয়ে আসার সুযোগ থাকবে শ্রমিকদের । এছাড়াও বাড়ানো হবে নজরদারি, ওয়াকিটকির সংখ্যা । টানেলে খনন কাজের আগে অথবা টানেলে যেকোনও রকম কাজের আগে ও কাজের সময় ধসে পড়ার কোনও আশঙ্কা রয়েছে কি না, সেটাও প্রতিদিন ঘনঘন খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন: