দার্জিলিং, 8 ডিসেম্বর: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে স্ত্রী, সেই সন্দেহে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে । খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে চা বাগানে ফেলে আসা হয়েছিল দেহ । পুলিশের চোখে ধুলো দিতে স্বামী নিজেই থানায় দায়ের করেছিল নিখোঁজের অভিযোগ । যদিও শেষরক্ষা হলো না। 20 দিন পর স্ত্রীর কঙ্কাল উদ্ধার করল পুলিশ । ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন বাগডোগরা থানার অন্তর্গত পুটিমারি এলাকায় । ঘটনায় স্বামী মহাদেব বিশ্বাসকে (28) গ্রেফতার করেছে পুলিশ । জেরার মুখে নিজের দোষ স্বীকারও করেছে সে ।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, "কঙ্কাল উদ্ধারের পর অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। " পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত মহাদেব বিশ্বাস বালি-পাথর বোঝাই ট্রাকের শ্রমিকের কাজ করে । প্রায় ছয় বছর আগে রিনা বিশ্বাসের সঙ্গে তার বিয়ে হয় । তাদের দু’টি সন্তানও রয়েছে । বিয়ের পর থেকেই দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় বলে অভিযোগ । মহাদেবের সন্দেহ ছিল যে তার স্ত্রী-র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এনিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়াও হতো । 13 নভেম্বর হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান রীনা। মহাদেব এলাকায় গুজব ছড়াতে শুরু করে যে সে অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে । পুলিশের সন্দেহ এড়াতে বাগডোগরা থানায় স্ত্রীর নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে । তবে রীনা’র নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাঁর বাবা-মা মানতে পারছিলেন না । এরপরই রীনার খুড়তুতো বোন প্রভাতী পুলিশের কাছে মহাদেবের বিরুদ্ধে রীনাকে হত্যা করার অভিযোগ দায়ের করে ।
সেই অভিযোগের তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ পুলিশি জিজ্ঞাসবাদে মহাদেব স্বীকার করে নেয় তার অপরাধের কথা ৷ রবিবার বাগডোগরা থানার পুলিশ ত্রিহানা চা বাগান এলাকার জঙ্গল থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করে । কঙ্কালের থেকে উদ্ধার অলঙ্কার দেখে পরিবারের লোকজন শনাক্ত করে সেগুলি রীনার বলে । অভিযুক্ত জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে, অভিযুক্ত প্রথমে রীনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে রাতের অন্ধকারে মৃতদেহটি যেখান থেকে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছিল সেখানেই ফেলে দিয়ে আসে । উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে । পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পডুন: