শিলিগুড়ি, 5 মার্চ: নদী ভাঙন রোধের দায়িত্ব কার ? এ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ৷ শনিবার উত্তরবঙ্গ সফরে আসেন তিনি ৷ বিজেপি সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন, কেউ নিজের লোকসভা কেন্দ্র বা বিধানসভা এলাকায় নদী ভাঙন রোধে কোনও পদক্ষেপ করছে না ৷ এর পালটা জবাবে জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় কটাক্ষ করেন, "রাজ্যের কাজ রাজ্যকেই করতে হবে ৷ রাজ্য না-পারলে কেন্দ্রকে জানিয়ে দিক ৷" এর উত্তরে রাজ্যের সেচ মন্ত্রী বিজেপি সরকারের উদাসীনতার দিকে আঙুল তোলেন (Minister Partha Bhowmick takes a dig at Central Government over River Erosion) ৷
শনিবার শিলিগুড়িতে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের প্রশাসনিক কার্যালয়ে নদী ভাঙন ও সেচ প্রকল্প নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সারেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, শিলিগুড়ি পৌরনিগমের মেয়র গৌতম দেব ৷ এরপর বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়কে নিশানা করে সাংবাদিকদের পার্থ বলেন, "তিনি সাংসদ ৷ তাঁর দল কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় আছে ৷ তিনি বলে দিন, আমার বিজেপি সরকার এক টাকাও দেবে না ৷ আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, তিনি যেদিন একথা বলে দেবেন, তারপরের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুরো কাজটা করবে ৷ মানুষের বোঝা উচিত এরা বক্তৃতা দেবে আর ভোটে দাঁড়াবে ৷" এর আগে মোদি সরকারের অসহযোগিতার কথা বিধানসভায় উত্থাপন করেছিলেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ৷ পাশাপাশি এদিন বর্ষার আগে ব্যারেজের পরিস্থিতি জানিতে রিপোর্ট চান সেচমন্ত্রী ৷ কী কী সমস্যা রয়েছে তা 31 মার্চের মধ্যে জানাতে বলেছেন মন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন: ভাঙনের জেরে তলিয়ে যেতে পারে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র! আতঙ্কে প্রহর গুনছেন ফলতাবাসী
মন্ত্রী আরও জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়ি সফরে এসে সেচের জল নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ মোট ছ'টি প্রকল্পের কাজ হচ্ছে ৷ বেশ কিছু এলাকায় শীতের সময় চাষিরা সেচের জল পান না ৷ সেই অভিযোগ পেয়ে সেচ দফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা জানান তিনি ৷ এর কয়েক মাসের মধ্যে নারারথলী, কামাক্ষ্যাগুড়ি সেচপ্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয় ৷
এদিন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক শিলিগুড়ি তিস্তা ভবনে এসে বলেন, "শুধু একটা খাল নয়, মোট ছ'টি খালের কাজ করছে সেচ দফতর ৷ নারারথলী সেচখাল সম্পূর্ণ শেষ হলেও বাকি কাজ শেষের পথে ৷ সব কাজ শেষ হলে অন্তত 600 হেক্টর চাষের জমিতে শীতকালেও সেচের জল দেওয়া সম্ভব হবে ৷ উপকৃত হবেন অন্তত 50 হাজার মানুষ ৷ এই সরকার যে কথা রাখে, এটা তারই প্রমাণ ৷" জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের ঝুমুর ঘোড়াহাগা সেচপ্রকল্পের কাজ 90 শতাংশ শেষ হয়েছে ৷ মাটিয়ালি ব্লকের কিলকোট ইন্দং ঝোরা সেচ প্রকল্পের কাজ 57 শতাংশ শেষ হয়েছে ও বাতাবাড়ি সেচপ্রকল্পের কাজ 25 শতাংশ শেষ হয়েছে ৷ আলিপুরদুয়ার জেলার নারারথলী, কামাক্ষ্যাগুড়ি সেচপ্রকল্পের কাজ শেষ ৷ তবে বানিয়া সেচ প্রকল্প, জোড়াই সেচপ্রকল্প শুরু হবে ৷
আরও পড়ুন: নদী ভাঙন রোধে প্রস্তাবিত 30টি প্রকল্পের অনুমোদন দিল না কেন্দ্র, হতাশ মন্ত্রী