কালিম্পং, 16 নভেম্বর :কিছুদিন আগে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছে ভুটানের জাতীয় পশু টাকিন ৷ পর্যটকদের মনোরঞ্জনই প্রধান কারণ ৷ আর এবার আসছে মিথুন ৷ তবে তার স্থান চিড়িয়াখানা নয় ৷ পাহাড়ের মানুষের আর্থিক বিকাশের জন্য আনা হচ্ছে মিথুনকে ৷ পাহাড়ের মানুষের আর্থ-সমাজিক উন্নয়ন ও খাদ্যের জোগান বাড়াতে মিথুন নামে এই গৃহপালিত পশুপালনে উদ্যোগ নিয়েছে NRC (ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার)
মিথুন গো-বংশীয় প্রজাতির পশু ৷ নাগাল্যান্ড থেকে আনা হচ্ছে মিথুনকে ৷ প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের দার্জিলিং জেলা আধিকারিক এস চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি আরও জানান, শুক্রবার কালিম্পংয়ে এনিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয় । সেখানে ছিলেন কালিম্পং জেলার চাষি, চিকিৎসক, সমাজকর্মী সহ অন্যরা ৷ খুব তাড়াতাড়ি এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি ৷
![pic](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/5084399_wb_d.jpg)
জাতীয় গবেষণা সংস্থার ডিরেক্টর অভিজিৎ মিত্র জানান , মিথুন শান্ত স্বভাবের প্রাণী । এটিকে নেচার গার্ডেনার বলা হয় । এই পশু সাধারণত কারও ক্ষতি করে না । জন্মের পরেই অন্তত 25 কেজি ওজন হয় । চার বছরে ওজন বেড়ে প্রায় 400 কিলো হয় । একটি পূর্ণবয়স্ক মিথুনের দাম 60 হাজার টাকা । মিথুন দিনে প্রায় তিন লিটার দুধ দেয় । ক্যালোরির হিসেবে দুই লিটার গরুর দুধ মিথুনের এক লিটার দুধের সমান । এছাড়া পাহাড়ি এলাকায় যেখানে ট্রাক্টর চালানো যায় না সেখানে মিথুনকে ব্যবহার করে জমি চাষ করা হয় । অরুণাচল, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মণিপুর সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে অনেক রাজ্যে মিথুনকে চাষের কাজের পাশাপাশি দুগ্ধ উৎপাদন ও মাংসের জন্য পালন করা হয় । উত্তর-পূর্ব ভারতের বাইরে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় মিথুন পালনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ৷
সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে 300 মিটার থেকে 3000 মিটার পর্যন্ত উচ্চতায মিথুন পালনের পক্ষে অনুকূল । এজন্য কালিম্পং সহ দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি এলাকায় মিথুন পালনে জোর দেওয়া হচ্ছে । তবে সমতলে শিলিগুড়ি ও মালদহেও মিথুন পালন সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা । মিথুন নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে অনেক কল্পকথা রয়েছে । সাধারণ মানুষের অনেকে মিথুনকে গোরু, মোষ বা ষাঁড় বলে মনে করেন । কিন্তু প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মিথুন গোরু, মোষ বা ষাঁড় নয় । এটি গো-প্রজাতির অন্তর্গত আলাদা একটি পশু । পাহাড়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মিথুন সহায়ক হবে বলে মনে করছেন প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর ।