শিলিগুড়ি, 26 জুলাই : ঠিক 20 বছর আগে কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ভারত । সেনার পাশাপাশি দুর্গম পাহাড়ি যুদ্ধক্ষেত্রে পাকিস্তানি সেনাকে নাজেহাল করে দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা । মিরাজ, মিগ বিমান নিয়ে দেশ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বায়ুসেনার জওয়ানরা । শিলিগুড়ির বাসিন্দা সত্যেন্দ্র আগরওয়াল ছিলেন বায়ুসেনার এয়ার কমোডর । অন্যদের মতো তাঁকেও ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছিল যুদ্ধে । তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আমাদের প্রতিনিধি ।
সত্যেন্দ্র আগরওয়াল জানান, 1999 সালে নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অফ কন্ট্রোল পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে পাকিস্তানের সেনা । ফলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে । কারগিলে আক্রমণ অপ্রত্যাশিত ছিল দেশের সেনার কাছে । স্থলসেনা ছাড়াও ডাক পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বায়ুসেনা । তিনি বলেন, "মনে একটাই প্রত্যয় ছিল । আমরাই জিতব । জিতেও ছিলাম । কারগিল যুদ্ধে অংশ নিতে পারে আমি গর্বিত ।"
প্রাক্তন এয়ার কমোডর জানান, প্রথম দিকে ভারতীয় সেনা পালটা লড়াই শুরু করে । প্রত্যাঘাত চলতে থাকে । কিন্তু, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় শত্রুপক্ষের সংখ্যা ছিল অনেক । তাই আকাশপথে আক্রমণের জন্যই ডাকা হয়েছিল বায়ুসেনাকে । মিগ এবং মিরাজ নিয়ে আকাশপথে শুরু হয় বায়ুসেনার প্রত্যাঘাত ।
কেমন ছিল লড়াইয়ের দিনগুলি? সত্যেন্দ্র বলেন, "সিনেমায় যুদ্ধের যে আবহ দেখানো হয়, তেমন নয় । আমরা শিফটে কাজ করতাম । আকাশে যে বিমান উড়ত তার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের জটিল অংক নিয়ে র্যাডারে থাকতাম আমরা । ওই যুদ্ধে বফর্স যেমন কাজে এসেছিল, তেমনি বায়ুসেনার মিগের তুলনায় মিরাজ নিয়ে আমাদের আক্রমণে কার্যত গুটিয়ে গেছিল শত্রুশিবির ।"
আজ কারগিল যুদ্ধের 20 বছরে সত্যেন্দ্র বলেন, "আমরা যখন লড়াইতে ছিলাম তখন পরিবার নয়, ফোকাস ছিল যুদ্ধ । দেশই ছিল আমাদের পরিবার । দেখতে দেখতে আমাদের ওই যুদ্ধের এতগুলি বছর কেটে গেল । এখনও মানুষ আমাদের জিজ্ঞাসা করেন সফলতম লড়াইয়ের নানা দিক । আমরা গর্বিত । তবে দুঃখ একটাই, লড়াইতে আমাদের কিছু যোদ্ধা শহিদ হন । কিন্তু আমরা পিছু হটিনি । টিম গেমে বিশ্বাসী ছিলাম সকলে । রোজ রাতে পরিকল্পনা হত । আর সকাল হলেই যুদ্ধবিমান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তাম । আমাদের জীবনের সফলতম যুদ্ধের নানা স্মৃতি আজও অমলিন ।"