দার্জিলিং, ২৯ মার্চ : "দিল্লি কা লাড্ডু নেহি চাহিয়ে । দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, কার্শিয়াং কা লাড্ডু চাহিয়ে । নির্বাচন এলেই একটি রাজনৈতিক দল পাহাড়ে আসে । পাহাড়বাসীকে উল্টো পাল্টা বুঝিয়ে ভোট নিয়ে চলে যায় । তারপর আর তাদের দেখা পাওয়া যায় না ।" মঙ্গলবার শৈলরানি দার্জিলিংয়ের ম্যালে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে নাম না করে বিজেপিকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee Slams BJP From Darjeeling) । এদিন জিটিএ-র তরফে ম্যালে একটি সামাজিক প্রকল্প বিতরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল । সেই অনুষ্ঠান থেকেই এই কথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
মঞ্চে উঠে নিজের বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী (Bengal CM Mamata Banerjee) । তিনি নাম না করে সরাসরি বলেন, "নির্বাচন এলে একটি রাজনৈতিক দল এসে পাহাড়কে উল্টো পাল্টা বুঝিয়ে গোটা ভোট নিয়ে চলে যায় । তারপর দশ কুড়ি বছর তাদের কোনও পাত্তা পাওয়া যায় না । এজন্য বলি আপনাদের দিল্লির লাড্ডু চাই না । আপনাদের কাছে যা আছে, তা আর কারও কাছে নেই ।"
এরপর তিনি বলেন, "আমাদের দেশে এমন অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে, যারা নির্বাচনের আগে একরকম কথা বলে আর নির্বাচনের পর আরেকরকম কথা বলেন । কিন্তু আমি যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি । আর দিল্লিতে একটা সরকার আছে দেখুন । এক বছরে দশবার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করেছে । চা-বাগান বন্ধ করেছে । নিজেরাই আগুন লাগায় আর নিজেরাই বদনাম করে ৷’’
তাঁর আরও দাবি, ‘‘বাংলাকে ওরা ভালবাসে না, জনতার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই । একটাই কাজ আগুন লাগানো, হিংসা হিংসা করে বাংলার বদনাম করা । এদিকে বিজেপিশাসিত রাজ্যের সবথেকে বেশি বদনাম । সেটা আর দেখে না । উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন যেতেই পাঁচদিনে পাঁচবার জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে । এতো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করেছে যে মানুষ কী খাবে ? বিজেপি খাবে না দিল্লির লাড্ডু খাবে ।"
এরপরই ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের পক্ষে সওয়াল তুলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, "ইউক্রেন থেকে 400 পড়ুয়া ফেরত এসেছে । আমি দিল্লিকে বলেছিলাম ওদের এখানে পড়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য । দিলে আমি এখানে ফেরত পড়ুয়াদের বিনামূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করতাম । কিন্তু কাল তারা উত্তর পাঠিয়েছে হবে না । জমিদারি চলছে তাদের । আমাদের ছেলেরা ফেরত এলে কোথায় যাবে, কোথায় খাবে, কী করবে চিন্তা করবে না ? খালি বড় বড় ভাষণ । আমি দাবি জানাতেই থাকব । আমি এক টাকাও নেব না, খালি অনুমতি দিক ।"
এরপরই পাহাড়বাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আপনাদেরও বুঝতে হবে যে তারা খালি মিথ্যা বলে । মানুষকে বিভ্রান্ত করতে খালি নিজেরা আগুন লাগায় আর নিজেরাই চেঁচায় । ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জন্য কেন্দ্রর কাছে দাবি জানিয়েছি । পাহাড় কেন ব্রাত্য হবে ? পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে কেন্দ্র চুপ করে বসে আছে । নির্বাচন এলে খালি বলবে, আমি দেশের সব থেকে বড় রক্ষক । রক্ষক নয়, তার উল্টোটা ।"
আরও পড়ুন : Mamata on Darjeeling Development : পাহাড়ের উন্নয়নে সবরকম সহযোগিতা করব, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর