শিলিগুড়ি, 20 জুন: করোনার পর স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে রাজ্যের পর্যটন শিল্প । মূল স্রোতে ফিরেছে উত্তরের পর্যটন । শৈলশহর দার্জিলিংয়ে ফের আগমন ঘটছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের । কিন্তু এরই মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পর্যটকদের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পারাপার । শিলিগুড়িতে আয়োজিত সপ্তম বেঙ্গল ট্রাভেল মার্টে যোগদান দিতে এসে নেপাল ও ভারতের মধ্যে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের বিষয়ে ওই সমস্যার কথা জানান নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের ম্যানেজার সুরিয়া থাপালিয়া ।
ইন্দো-নেপাল সীমান্ত পারাপারের জন্য রয়েছে দু’টি চেক পোস্ট। একটি শিলিগুড়ি সংলগ্ন খড়িবাড়ি ব্লকের পানিট্যাঙ্কি ও আরেক’টি মিরিক মহকুমার পশুপতি । নেপাল ও ভারতের দেশের নাগরিকদের জন্য সেটি মুক্ত বা ওপেন বর্ডার হলেও তৃতীয় কোনও দেশের নাগরিক বা পর্যটকরা জন্য ওই দুই সীমান্ত দিয়ে পারাপার বন্ধ রয়েছে । যদিও করোনার আগে নেপাল হয়ে ভারতে কিংবা ভারত হয়ে নেপালে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারত বিদেশি পর্যটকরা । করোনার সময় সংক্রমণ যাতে বৃদ্ধি বন্ধ করতে তৃতীয় কোনও দেশের নাগরিক বা পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় সীমান্ত পারাপার । জারি করা হয় নিষেধাজ্ঞা । করোনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এখনও সেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ।
যার ফলে নেপাল হয়ে ভারত কিংবা ভারত হয়ে নেপালে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের একটা বড় অংশ সমস্যায় পরেছেন । তার কারণ বিদেশ মন্ত্রক থেকে ইন্দো নেপাল সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেক পোস্টগুলির উপর এখনও সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে ৷ প্রতি বছর ওই দুই সীমান্ত দিয়ে গড়ে অন্তত সাত থেকে দশ হাজার বিদেশি পর্যটক পারাপার করে থাকে। যে কারণে এবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কাছে ওই নিষেধাজ্ঞা তোলার ব্যাপার আবেদন করতে চলেছে নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড ও নেপাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুর এন্ড ট্রাভেল এজেন্টস ( নাটা)। তাদের দাবিতে সায় দিয়েছে উত্তরের পর্যটন সংস্থাগুলিও। ওই বিষয়ে সাহায্য চাওয়া হয়েছে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার থেকেও ।
আরও পড়ুন : নর্থ সিকিমে ধসে আটক 400 পর্যটকে উদ্ধার করল সেনা
প্রসঙ্গত, পর্যটন শিল্পের প্রসারে চলতি বছরের 9 সেপ্টেম্বর থেকে 11 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয়োজিত হতে চলেছে সপ্তম বেঙ্গল ট্রাভেল মার্ট। পরিচালনায় ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল এন্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন। গুজরাত, অসম, হরিয়ানা, রাজস্থানের মতো রাজ্যের পাশাপাশি অংশ নেবে নেপাল, বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও।
ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সোমবার নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের ম্যানেজার সুরিয়া থাপালিয়া বলেন, "আন্তর্জাতিক সীমান্ত বা ক্রস বর্ডার ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে একটা অন্যতম সমস্যা হল তৃতীয় দেশের পর্যটকদের জন্য ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু না হওয়া। কারণ নেপাল পর্যটনের সব থেকে বড় অংশিদার হল ভারত। অনেক বিদেশি পর্যটক নেপালে আসলে ভারতে যেতে চান। আবার অনেকে ভারত থেকে নেপালে যেতে চান। কিন্তু করোনার পর বিদেশি পর্যটকদের সীমান্ত পারাপারে নিষেধাজ্ঞা এখনও তোলা হয়নি। যে কারণে একটা বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেজন্য নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড এবং নাটা ভারত সরকারের কাছে নিষেধাজ্ঞা তোলার পাশাপাশি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট চালু করার জন্য আবেদন করা হবে ।" এথোয়ার সাধারণ সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ বলেন, "নেপালের পাশাপাশি উত্তরে পর্যটন সংস্থাগুলিও ভারত সরকারের কাছে একই আবেদন জানাবে। এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন তিনি সেই সমস্যা সমাধানের জন্য বিদেশমন্ত্রককে বিষয়টি জানাবেন।"
আরও পড়ুন : পাহাড়ে ফুলফর্মে বর্ষা ! তিস্তা ও জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা