দার্জিলিং, 2 নভেম্বর: ফের পৃথক রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ময়দানে নামলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং ৷ পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে মোর্চা নেতা বিমল গুরুং ৷ অসমে এ নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন তিনি ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বৈঠকগুলির মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের নিজের মাটি ফিরে পেতে চাইছেন বিমল গুরুং (Bimal Gurung is on Field for Gorkhaland) ৷
দিল্লিতে গোর্খা ডেভলপমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রেম তামাং, অসমের জিটিসি'র সদস্য রাজ নেওয়ার, আগসুর অর্জুন ছেত্রী-সহ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিমল গুরুং ৷ এছাড়াও পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন (গোর্খা সমাজ), অসম গোর্খা সম্মেলন, কোকরাঝার মহিলা সমাজ, কোকরাঝার গোর্খা সেবা সমিতি, ইউনাইটেট পিপলস পার্টির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তিনি। ওই বৈঠকে ডিসেম্বর মাস থেকে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আন্দোলন সংগঠিত করতে চাইছেন বিমল গুরুং ৷ পাশাপাশি আগামী 10 ও 11 ডিসেম্বর দিল্লিতে পৃথক রাজ্যের দাবিতে কেন্দ্রীয় সম্মেলন করতে চলেছেন জিজেএম প্রধান ৷
বিমল গুরুং বলেন, ‘‘আমার লক্ষ্য একটাই ৷ গোর্খাদের জন্য পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ড ৷ রাজ্য বা কেন্দ্র একাধিকবার আশ্বাস দিলেও, কেউই ওই বিষয়ে পদক্ষেপ করছে না ৷ সেজন্য আমাদের দাবিতে এবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা গোর্খাদের নিয়ে সংগঠিত করে আন্দোলনে নামব ৷’’ দার্জিলিং হিল তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছেন কোনও ভাগাভাগি নয় ৷ আর পাহাড় এখন শান্তি ও উন্নয়ন চায় ৷ বিমল গুরুং একজন ব্যর্থ নেতা ৷ তাঁকে পাহাড়বাসী প্রত্যাখান করেছেন ৷ এখন ফের তিনি ওই দাবিকে সামনে রেখে নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতে চাইছেন ৷’’
আরও পড়ুন: 7 দিন সিকিমে চিকিৎসাধীন থাকার পর পাহাড়ে ফিরলেন গুরুং
প্রসঙ্গত, 2017 সালে পৃথক রাজ্যের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলনের পর, গা ঢাকা দেন বিমল গুরুং ৷ এর পর তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে ৷ রাজ্য সরকারের সাহায্যে ফের পাহাড়ে প্রত্যাবর্তন করেন ৷ বিমল গুরুং ফেরার পর বুঝতে পারেন, পাহাড়ের রাজনীতিতে তাঁর ভিত দুর্বল হয়ে পড়েছে ৷ আর তা আরও স্পষ্ট হয় দার্জিলিং পৌরসভা নির্বাচন ও জিটিএ নির্বাচনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পরাজয়ে ৷ একপ্রকার ওই দুই নির্বাচনের পর পাহাড়ের রাজনীতিতে কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৷
অন্যদিকে, পাহাড়ের ক্ষমতার রাশ বর্তমানে রয়েছে গুরুং'য়ের একসময়ের ছায়াসঙ্গী তথা ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনিত থাপার হাতে ৷ ফলে রাজনৈতিকমহল মনে করছে, এই অবস্থায় পাহাড়ে ফের নিজের অস্তিত্ব কায়েম করতে, পৃথক গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকেই কাজে লাগাতে চাইছেন বিমল গুরুং ৷ বিমল গুরুংয়ের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে হামরো পার্টিও ৷