শিলিগুড়ি, 28 নভেম্বর: ফের বড়সড় সাফল্য পেল বন দফতর । দুটি পৃথক অভিযানে শিলিগুড়িতে উদ্ধার কোটি টাকার বার্মাটিক কাঠ ও হরিণের শিং । ঘটনায় গ্রেফতার ভিনরাজ্যের দুই বাসিন্দা-সহ চার পাচারকারী । পাশাপাশি হরিণের শিং পাচারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বন দফতর । জানা গিয়েছে, বন বিভাগের চোখে ধুলো দিতে শিং কেটে বের করার পর দেহ লোপাট করতে কখনও বিক্রি, আবার কখনও নিজেরাই হরিণের মাংস খেয়ে নিত পাচারকারীরা । ঘটনায় ধৃতদের মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মহকুমা ও জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে বন বিভাগের আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ চালাবে বলে খবর ।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার মাঝরাতে প্রথম অভিযান চালায় কার্শিয়াং ফরেস্ট ডিভিশনের বাগডোগরা রেঞ্জ । শিলিগুড়ি সংলগ্ন গোসাইপুর এলাকায় ওই অভিযান চালানো হয় । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি থেকে একটি কন্টেনারবাহী ট্রাকের পিছু নিতে শুরু করে বন দফতর । গোসাইপুর টোল গেটে পৌঁছতেই আটক করা হয় ওই ট্রাকটিতে । ট্রাকের কন্টেনার থেকে উদ্ধার হয় বার্মাটিক কাঠ । উদ্ধার হওয়া ওই কাঠের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় 50 লক্ষ টাকার বেশি ৷ ঘটনায় মহম্মদ শহরুদ্দিন ও মহম্মদ নাসিম নামে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয় । দু'জনেই রাজস্থানের বাসিন্দা । বাগডোগরার রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, "অসম থেকে ওই কাঠ দিল্লিতে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল । ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
অন্যদিকে, এ দিন রাতেই আরেকটি পৃথক অভিযান চালায় বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের আমবাড়ি ফালাকাটা রেঞ্জ । গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পর বেশ কয়েকদিন ধরে পাচারকারীদের উপর নজর রাখছিলেন বন কর্মীরা । আর তারপরেই অভিযানে মেলে সাফল্য । এরপর সূযোগ বুঝে পাচারকারীদের সঙ্গে ক্রেতা সেজে যোগাযোগ করেন আমবাড়ি ফালাকাটা রেঞ্জার আলমগীর হক । সোমবার রাতে ফাঁড়াবাড়ি নেপালি বস্তি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছটি হরিণের শিং-সহ দু'জনকে গ্রেফতার করা হয় । প্রতিটি সিং পূর্ণবয়স্ক হরিণের বলে জানা গিয়েছে । শিংগুলি লম্বায় আড়াই ফুটের বেশি। উদ্ধার হওয়া শিংগুলির মধ্যে দুটি খুব অল্প সময়ের।
গত একমাস আগে একজোড়া শিং-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল বন দফতর । আর তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই পাচারকারীদের হদিশ পায় বন বিভাগ । শীতের সময় বনাঞ্চলে পর্যটকদের আনাগোনা বেরে যায় । সেইমতো চাহিদা বাড়ে হরিণের মাংস ও শিংয়ের । যে কারণেই এই পাচারকারীরা হরিণ মেরে তার শিং বিক্রি করার ছক কষেছিল । রেঞ্জার আলমগীর হক বলেন, "ঘটনায় আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে । সেজন্য পাচারকারীদের পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না । তবে ধৃতরা ফাড়াবাড়ির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে । আরও বেশ কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে আমাদের অনুমান । একটা চক্র কাজ করছে এর পিছনে ।"
আরও পড়ুন: