শিলিগুড়ি, 20 জুলাই: শিলিগুড়ির দুই ফুসফুস হল দু'পাশে থাকা মহানন্দা অভয়ারণ্য ও বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল । শিলিগুড়ির জনসংখ্যা বাড়তেই সাধারণ মানুষ, জমি মাফিয়াদের বহুদিন থেকে নজর সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলি । ধীরে ধীরে গাছ কেটে চলছিল জবরদখল (Siliguri Plantations) । শহর সংলগ্ন তো বটেই । জঙ্গলের গভীরেও রাতের অন্ধকারে কিংবা বন দফতরের অলক্ষ্যে শুরু হয় দখলদারি । বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলটি 272 বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে । যার মধ্যে 100 বর্গ কিলোমিটার জঙ্গল ইতিমধ্যে জবরদখল হয়ে গিয়েছে । এবার সেই জবরদখল হয়ে যাওয়া জঙ্গল পুনরুদ্ধার করার উদ্যোগ নিল বন দফতর । আর সেইসব জমি পুনরুদ্ধার করে করে ফের জঙ্গলের রূপ ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য বন বিভাগের ।
আরও পড়ুন : অভয়ারণ্য থেকে লোকালয়ে, নীলকণ্ঠ ময়ূর দেখতে ভিড় শান্তিনিকেতনে
বন মহোৎসব উপলক্ষ্যে বুধবার শিলিগুড়ি সংলগ্ন বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের ছোট ফাপড়ি এলাকার প্রায় 1.2 হেক্টর জঙ্গল কেটে দখল করে নিয়েছিল জমি মাফিয়ারা । আর সেই জমিতে শুরু হয়েছিল অস্থায়ী দোকান, বাড়িঘর । এতে প্রভাব পড়ছিল জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রে । রাতারাতি ওই জমি দখলমুক্ত করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ফের জঙ্গলের রূপ ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিল বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের সারুগাড়া বন বিভাগ । 1.2 হেক্টর জমিতে লাগানো হল প্রায় দু'হাজার চারাগাছ । সমস্ত চারাগাছই ভেষজ ও ফলের চারাগাছ । বন মহোৎসব উপলক্ষে একটু বিশেষভাবে পালন করা হল দিনটিকে । জবরদখল হওয়া জঙ্গল পুনরুদ্ধার করে প্রায় 40 হাজার চারাগাছ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে বন বিভাগ ।
এদিনের ওই বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (উত্তরবঙ্গ) উজ্জ্বল ঘোষ, মুখ্য বনপাল ( বন্যপ্রাণ) এসকে মোলে, উত্তরবঙ্গের আধিকারিক (সিলভিকালচার) সুরত্ন শেরপা, বৈকুন্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল-সহ অন্যান্যরা । এদিন বিভিন্ন স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা মিলে বৃক্ষরোপণ করে ।
আরও পড়ুন : গরম ও করোনা থেকে হরিণদের রক্ষা করতে উদ্যোগী বন দফতর
উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, "বনের অনেক জমি জবরদখল হয়েছে । সেসব জমি পুনরুদ্ধার করে আমরা ফের জঙ্গলের রূপ ফিরিয়ে দেব । জঙ্গল সাফ করে জবরদখল করা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না । আগামীতেও একইভাবে অভিযান চলবে । এদিন বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের জবরদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার করে সেই জায়গায় বৃক্ষরোপণ করা হল । কয়েক বছরে জায়গাটি জঙ্গলের রূপ ফিরে পাবে ।"
সোসাইটি ফর নেচার অ্যান্ড অ্যানিম্যাল প্রোটেকশনের সম্পাদক কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, "তরাই, ডুয়ার্সের অনেক জঙ্গল জবর দখল হয়ে চলছে । বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের অনেক অংশ দখল হয়েছে । এভাবে পুনরুদ্ধার করে ফের গাছ না লাগালে বন ধ্বংস হয়ে যাবে । আমরা বন বিভাগের পাশে রয়েছি ।"