শিলিগুড়ি, 11 অগাস্ট : তারা অর্থের জোগান দিতে সারাদিন ঘুরে বেড়ায় সাফারির এদিক-সেদিক ৷ তাদের পিঠে চড়ে জঙ্গলের নানাপ্রান্তে ঘুরে বেড়ান পর্যটকরাও ৷ কিন্তু, গজরাজ থুরি রানিদেরই নাকি ঠিকমতো খাবার জোটে না ।
আধপেটা খেয়েই বেঙ্গল সাফারির হয়ে কাজ করতে হয় লক্ষ্মী ও উর্মিলাদের । চার পায়ের এই দাঁতালগুলোর দিকে তেমন নজর নেই প্রশাসনের ৷ এমন অভিযোগ তুলেছেন বেঙ্গল সাফারি পার্কের প্রধান মাহুত রঘুনাথ রায় । তাঁর অভিযোগ, একটা হাতির খাদ্য চাহিদা মেটাতে যে বিপুল খরচ হয়, তা সামাল দিতে সরকারের সমস্যা হচ্ছে । কথা স্বীকার করেছে বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা ধরম দেও রাইও । তিনি জানিয়েছেন, পরিমাণ হয়ত কম , তবে প্রোটিনজাতীয় খাবার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, যাতে ক্যালরির ঘাটতি মেটানো যায় ।
আগামীকাল বিশ্ব হাতি দিবস ৷ তার আগেই জাঁকজমক করে দিনটি পালিত হল বেঙ্গল সাফারি পার্কে । এখানকার দুই হাতি লক্ষ্মী ও উর্মিলাকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয় । সঙ্গে যত্ন করে চাল, ডাল ও কলা খাওয়ানো হয় । তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসে শিলিগুড়ি কলেজের একদল পড়ুয়াও । তারা লক্ষ্মী, উর্মিলাকে খাওয়ায় ।
কিন্তু একদিনে এত খাবার খেলে হবে কি? বাকি দিনগুলো? প্রশ্ন এখানেই৷ বিতর্ক এখানেই ৷ অন্য দিনগুলোতে তো আধপেটা হয়ে সারা জঙ্গল ঘুরে বেড়াতে হয় তাদের । জলদাপাড়া থেকে লক্ষ্মী-উর্মিলার দেখভালের দায়িত্ব সামলে আসা রঘুনাথবাবু বিষয়টি সামনে আনার পর এটি উড়িয়ে দিতে পারছেন না সাফারি পার্কের বাকিরাও । পরে রঘুনাথ রায় বলেন, "একটি হাতি সারাদিনে যা খায় তা জোগান দিতে পারে না সরকার । সে ক্ষেত্রে আধপেটা থাকতে হয় এখানকার হাতিদের । দিনে গড়ে ছয় কুইন্ট্যাল করে খাবার দেওয়া হয় । যেখানে পূর্ণবয়স্ক হাতির ক্ষেত্রে দিনে গড়ে 12 কুইন্ট্যাল খাবার প্রয়োজন ।"
এ প্রসঙ্গে ধরম দেও রাইয়ের সাফাই, "একটি হাতি সারাদিনে জঙ্গলে লতা-পাতা, ঘাস, ফল-মূল খায় । সে সব খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে না । সে ক্ষেত্রে চাল, ডাল, গুড় ও লবণ-সহ খাবার দিলে পরিমাণ কম হলেও সমস্যা নেই । কেন না, তাতে প্রোটিনের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি । সে ক্ষেত্রে হাতিগুলি যে অভুক্ত তা বলা যায় না ।"