শিলিগুড়ি, 6 অগাস্ট: কোরোনা মোকাবিলায় এবার হোম আইসোলেশনকে প্রাধান্য দিতে চাইছে দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর । হিসেব অনুযায়ী ইতিমধ্যেই দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা 2000-এর সংখ্যা পার হয়ে গেছে । এই পরিস্থিতিতে উপসর্গহীন, সামান্য উপসর্গযুক্ত রোগীদের শর্তসাপেক্ষে বাড়িতেই চিকিৎসায় জোর দেওয়া হচ্ছে । এর পাশাপাশি দার্জিলিং জেলায় আরও কয়েকটি সেফ হোম খোলার চেষ্টা করছে প্রশাসন ।
স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের মতে, উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকলে বাড়িতে থেকেই এই রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব ৷ সেটা হাসপাতালে চিকিৎসার থেকে তুলনামূলকভাবে ভালো । কারণ এক্ষেত্রে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের পাশে গিয়ে নতুন করে সংক্রমণের আশঙ্কা এড়ানো যায় ।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ঠিক কী কী শর্তে বাড়িতেই চিকিৎসা করা সম্ভব-
1. আক্রান্তের বয়স যদি অল্প হয় সেক্ষেত্রে তাদের বাড়িতেই চিকিৎসা করা যেতে পারে।
2. আক্রান্ত যদি উপসর্গহীন বা সামান্য উপসর্গ যুক্ত হয় তাদের চিকিৎসা বাড়িতেই করা সম্ভব।
3. বাড়িতে আলাদা ঘর এবং আলাদা শৌচাগার থাকলে এই চিকিৎসা বাড়িতে করা যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা ।
4. এর পাশাপাশি সংক্রমিত ব্যক্তির যদি কিডনির সমস্যা বা অন্যান্য কোন রোগ না থাকে সেটি নিশ্চিত হতে হবে ।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক অমিত দত্তের কথায়, "উপসর্গহীন বা সামান্য উপসর্গ থাকা COVID পজ়িটিভিদের আমরা বাড়িতেই থাকতে বলছি । দু'বেলা প্রোটিনযুক্ত খাবার এবং ভিটামিন সি সহ বেশ কিছু ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি ৷ সহজলভ্য প্যারাসিটামল ছাড়াও এজিথ্রোমাইসিন নামের একটি ওষুধ আমরা খেতে বলছি । সম্ভব হলে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খেতে বলছি । পৌর এলাকার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য কর্মীরাই তাদের পরবর্তী সোয়াব সংগ্রহ করে নেবেন । আমরা দেখেছি বাড়িতে থাকলে রোগী মানসিকভাবেও ভাল থাকছেন । ফলে এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করানো শ্রেয় । আমরা আক্রান্তদের তা বোঝাচ্ছি । এতে কাজও হচ্ছে ।"
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুণ্যম বালম জানিয়েছেন, "শর্তসাপেক্ষে বাড়িতে চিকিৎসায় জোর দেওয়া হচ্ছে । আমরা প্রথমেই দেখে নিচ্ছি আক্রান্তের বয়স কত । এর পাশাপাশি আক্রান্তর উপসর্গ ও অন্য কোনও রোগ আছে কি না সেটিও দেখা হচ্ছে ৷ এই সমস্ত বিষয়গুলোর পাশাপাশি বাড়িতে আলাদা ঘর এবং আলাদা শৌচাগার আছে কিনা তা নিশ্চিত হলে আমরা ডাক্তারদের পরামর্শে আক্রান্তকে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসার কথা বলছি । তিনি আরও বলেন, "রোগী বাড়িতে চিকিৎসায় সম্মত না হলে হাসপাতালের পরিবর্তে সেফ হাউসে যাওয়ার কথা বলছি । বাড়িতে যেসব রোগীরা চিকিৎসা করাবেন তাদের জন্য রয়েছে ডাক্তারদের বিশেষ একটি দল । তাদের ফোন নম্বর রোগীদের কাছে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে । যেকোনও প্রয়োজনে ওই ডাক্তারদের সরাসরি যোগাযোগ করছেন বাড়িতে থাকা সংক্রমিত ব্যক্তি বা তাদের পরিবার । স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা মাঝেমধ্যে গিয়ে তাদের অক্সিজেন লেভেল এবং অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করছেন । ইতিমধ্যেই জেলার প্রায় আড়াইশো জনকে বাড়িতে রেখে সুস্থ করে তোলা হয়েছে ।"