শিলিগুড়ি, 28 জানুয়ারি: পৃথক গোর্খাল্যান্ড ইস্যু উঠলেই পাহাড় জ্বলবে ৷ এদিন বিমল গুরংদের জিটিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রসঙ্গে এমনই সাবধানবাণী জিটিএ’র কার্যনির্বাহী আধিকারিক অনিত থাপার (Don't let Darjeeling Burn on Gorkha land Issue) ৷ তবে, তিনি তা হতে দেবেন না বলেও জানিয়েছেন ৷ পাশাপাশি, পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান প্রসঙ্গে তাঁর মত, জিটিএ'কে আরও সক্রিয়ভাবে কার্যকর করা ৷ এদিন পাহাড়ের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির উদ্দেশ্যে অনিত থাপা হুঁশিয়ারি, পৃথক রাজ্যের দাবিতে পাহাড়ে অশান্তি করতে দেবেন না ৷
উল্লেখ্য, শুক্রবারই জিটিএ চুক্তি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন বিমল গুরং এবং তাঁর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৷ যার পরবর্তী পর্যায়ে ফের একবার পৃথক গোর্খাল্যান্ডের ইস্যু তুলতে পারেন বিমল গুরুং এবং পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলি ৷ এই পরিস্থিতিতে জিটিএ’র কার্যনির্বাহী আধিকারিকের এই মন্তব্য সম্পূর্ণভাবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে থাকার বার্তা বলেই রাজনৈতিক মহলের মত ৷
এদিন পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান ইস্যুতে অনিত থাপা বলেন, ‘‘বর্তমানে পাহাড়ে রোজগার, পানীয় জল সমস্যার সমাধান ও উন্নয়নই হল আমার জন্য স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান ৷ এছাড়া আর কোনও কিছু সমাধান নয় ৷’’ শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং, রোশন গিরি, হামরো পার্টি সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড, প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিনয় তামাংদের একহাত নেন অনিত থাপা ৷ জানান, তাঁদের সমর্থন প্রত্যাহারে কিছুই যায় আসে না ৷ কারণ, জিটিএ চুক্তি আইনে পরিণত হয়েছে ৷
এদিন বিমল গুরুংকে নিশানা করে অনিত থাপা বলেন, ‘‘জিটিএ চুক্তি এখন আইন হয়ে গিয়েছে ৷ তাই মোর্চা সমর্থন প্রত্যাহার করলেও কিছু যায় আসে না ৷ তারা এসব পুতুল খেলা ভাবছে ৷ এতদিন নিজেদের স্বার্থে জিটিএ ভালো ছিল ৷ এখন ক্ষমতায় নেই বলে, সেটাই খারাপ ৷’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের ইস্যু তুললেই এখন পাহাড়ে আগুন জ্বলবে ৷ গোর্খাল্যান্ডের কথা বলে আমরা আর পাহাড়ে আগুন লাগাতে চাই না ৷’’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন অনিত থাপা বলেন, ‘‘মোর্চা সমর্থন প্রত্যাহার করলে কিছু যায় আসে না। জিটিএ চুক্তি এখন আইন হয়ে গিয়েছে। তারা এসব পুতুল খেলা ভাবছে। এতোদিন নিজেদের স্বার্থে এই জিটিএ'ই ভালো ছিল। এখন ক্ষমতা না থেকে সেটাই খারাপ। গোর্খাল্যান্ডের ইস্যু তুললেই এখন পাহাড়ে আগুন জ্বলবে। গোর্খাল্যান্ডের কথা বলে আমরা আর পাহাটে আগুন লাগাতে চাই না ।’’ এরপরই বিরোধীদের উদ্দেশ্যে একপ্রকার হুশিয়ারি দেন অনিত থাপা ৷
আরও পড়ুন: জিটিএ চুক্তি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার মোর্চার, সরগরম দার্জিলিংয়ের রাজনীতি
তিনি বলেন, ‘‘আলাদা রাজ্যের নামে পাহাড়কে আর অশান্ত করতে দেওয়া হবে না ৷ দিল্লিতে আন্দোলন করুক, আমাদের কিছু যায় আসে না ৷ ক্ষমতা ফিরে পেতেই এখন এসব পাব্লিসিটি স্টান্ট করছেন তাঁরা ৷’’ রাজ্য সরকারের পক্ষ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে জোট করে লড়াই করেছি ৷ আমি সেটা প্রথম থেকেই খোলাখুলি বলে আসছি ৷ এখন আমাদের ধর্ম রাজ্যের সঙ্গে থেকে পাহাড়কে শান্ত রাখা ৷ রাজ্য আমাদের সবরকম সাহায্য করছে পাহাড় পরিচালনায় ৷’’
অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রশংসাও করেন অনিত থাপা ৷ শনিবারই মালদায় পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে খারিজ করেছেন দিলীপ ঘোষ ৷ এদিন সেই বিষয়ে অনিত থাপা বলেন, ‘‘আমি বলব বিজেপিতে দিলীপ ঘোষই একমাত্র সৎ ব্যক্তি ৷ যে পরিস্কার কথা বলেছে ৷ না হলে বিজেপির কোনও নেতা জিটিএ বা গোর্খাল্যান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না ৷ আর আলাদা রাজ্য রাজ্যের নয়, কেন্দ্রের ইস্যু ৷ কেন্দ্র বলুক কবে আমাদের দেবে আলাদা রাজ্য ?’’