দার্জিলিং, 6 অক্টোবর: শুক্রবার সকাল থেকে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হতেই জোরকদমে উদ্ধারকাজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। আর উদ্ধারকাজ শুরু হতেই মৃত্যুমিছিল সিকিম জুড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতীয় সেনা, গ্রিফ, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, প্রশাসন ও পর্যটন সংস্থার তরফে হেল্প লাইন, হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে ।
সিকিম প্রশাসন সূত্রে পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত 22 জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে । 114 জনের মতো মানুষ এখনও নিখোঁজ । লোনাক লেকে বাঁধ ভাঙা জলের স্রোতে সিকিমের 13টি সেতু সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দু'হাজার 500 মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিকিমে প্রায় তিন হাজার পর্যটক আটকে ছিল। শুক্রবার সেই সংখ্যা অনেকটাই কমেছে বলে খবর। তবে এখনও প্রায় 800 থেকে এক হাজার পর্যটক সেখানে আটকে রয়েছে। সিকিমের মঙ্গন জেলায় মৃত্যু হয়েছে চারজনের। পাশাপাশি 17 জন নিখোঁজ রয়েছে।
গ্যাংটক জেলায় 5 জনের মৃত্যু হয়েছে। 22 জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। নামচি জেলা থেকে কোনও মৃত্যুর খবর আসেনি । তবে সেখানে পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছে। পাকইয়ং জেলায় 10 জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে 6 জন সেনা জওয়ান। পাশাপাশি নিখোঁজ রয়েছে 59 জন। উদ্ধার হওয়া দেহগুলির মধ্যে 5টি মালবাজার এসএস হাসপাতাল, 3টি ময়নাগুড়ি রুরাল হাসপাতাল, 7টি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, 4টি দেহ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এছাড়া 7 হাজার 644 জনকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
10 নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় ছোট যাত্রীবাহী ও ছোট মালবাহি গাড়ি শিলিগুড়ি থেকে সেভক হয়ে গরুবাথান, রংপো হয়ে গ্যাংটকে পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি শিলিগুড়ি থেকে গজলডোবা হয়ে ডামডিম, গরুবাথান, লাভা, আল্গাড়া, রিষি, রোরথাং, পাকইয়ং হয়ে গ্যাংটক রুটে চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সিকিমের পশ্চিম জেলাতে যাওয়ার জন্য শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং হয়ে সিংলা, জোরথাং, নামচি রুটে পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রথম স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গুলি করে আত্মঘাতী হেড কনস্টেবল
সিকিমের মুখ্য সচিব ভিবি পাঠক বলেন, "উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফার্মেসি অ্যাসোসিয়েসন-সহ অন্যান্য সমস্ত সংস্থাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে । প্রত্যেক জেলায় হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে কাজ করা হচ্ছে ।" ভারতীয় সেনার কর্নেল অঞ্জন কুমার বাসুমাতারি বলেন, "ভারতীয় সেনার তরফে উদ্ধার কাজ চলছে। আটকে থাকা পর্যটকরা যাতে বাড়িতে যোগাযোগ করতে পারে তার জন্য স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য শিবির ও হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে।"