শিলিগুড়ি, 21 সেপ্টেম্বর : করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই শিথিল হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ ৷ ধীরে ধীরে রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে শুরু হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা ৷ পুজোর আগে উত্তরবঙ্গের পর্যটন ছন্দে ফিরতে শুরু করায় আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা ৷ করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পরার আশঙ্কা থাকলেও রাজ্য জুড়ে টিকাকরণের পর করোনার ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে উত্তরের পর্যটনের হাল ফিরতে শুরু করেছে । টিকাকরণ সম্পূর্ণ হতেই বাইরে বেরিয়ে পড়েছেন পর্যটকরা ।
পুজোর ছুটির মরসুম শুরু না হলেও ইতিমধ্যেই 90 শতাংশ হোটেল বুকিং হয়ে গিয়েছে । পর্যটকদের বেশ ভাল সাড়া মিলছে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের হোম- স্টেগুলিতেও । রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপই পর্যটনকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করছে বলে মত একাংশের । পর্যটন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরে ধীরে হলেও চাহিদা বাড়ছে উত্তরের প্যাকেজ ট্যুরিজমের । বিশেষ করে রাজ্য বনোন্নয়ন নিগম, পর্যটন উন্নয়ন নিগম এবং উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ছোট প্যাকেজ ট্যুরিজমের চাহিদাও বাড়ছে ।
আরও পড়ুন : Bengal Safari : পুজোর মুখে খুলে গেল বেঙ্গল সাফারি পার্ক, খুশির হাওয়া পর্যটন মহলে
রাজ্য সরকারের কাছে পর্যটন সংস্থার আবেদনে সাড়াও মিলেছে । রাজ্যের সমস্ত চিড়িয়াখানা, অভয়ারণ্য, সাফারি পার্ক-সহ সমস্ত পার্ক ও উদ্যান পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার । অন্যদিকে, পর্যটকদের জন্য টয়ট্রেন পরিষেবা ও পাহাড়ে পুনরায় জয় রাইড চালু করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে । এছাড়াও ডুয়ার্সের জন্য ভিস্তাডোম স্পেশাল ট্রেন চালু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ । সব মিলিয়ে উত্তরের ট্যুরিজম সার্কিট ফের একবার সচল হওয়ায় হাসি ফুটেছে পর্যটক থেকে পর্যটন ব্যবসায়ীদের ।
করোনার জেরে প্রায় দু'বছর ধরে পর্যটন বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল উত্তরের পর্যটন শিল্প । অনেকের চাকরি গিয়েছে, আবার বন্ধ হয়েছে অনেক পর্যটন সংস্থা । সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় আশি কোটি টাকার । সেই অপূরণীয় ক্ষতি সামলে পর্যটন আদৌ ছন্দে ফিরতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল । তবে চলতি বছরেই পর্যটন স্বাভাবিক হওয়ায় সেই ক্ষতিপূরণ না করতে পারলেও পর্যটনশিল্প কিছুটা ধাক্কা সামলে উঠতে পারবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
আরও পড়ুন : Kanchenjunga Stadium : দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম হাতে নিল রাজ্য সরকার
অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন এন্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, "সত্যি আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি । দু'বছর ধরে পর্যটন যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, সেই জায়গায় পুজোর আগে পর্যটন কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ফের আশা জেগেছে সবার মধ্যে ।"
এই বিষয়ে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্রাভেল এন্ড ট্যুর ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের কার্যকরী কমিটির সদস্য সাধন রায় বলেন, "একে একে অভয়ারণ্য, টয়ট্রেন পরিষেবা, চিড়িয়াখানা-সহ অন্যান্য পর্যটন সহযোগী পরিষেবা চালু হওয়ায় ফের ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে উত্তরের পর্যটন । ইতিমধ্যে পুজোর বুকিংয়ে খুব ভাল সাড়া মিলছে ।"
হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অভিজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, "ইতিমধ্যে পুজোর বুকিং আসতে শুরু করেছে । পর্যটকদের ভাল সাড়াও মিলছে । আশা করছি করোনার পর এবার আমরা কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরব ।"
আরও পড়ুন : Vistadome Coach: ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, উঠে পড়ুন ভিস্তাডোম কোচে