শিলিগুড়ি, 30 এপ্রিল : চেন্নাইয়ের এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের দেহে মিলল কোরোনা ভাইরাস । ত্রিপুরা থেকে চেন্নাই ফেরার পথে গতরাতে ওই অ্যাম্বুলেন্স চালককে আটকায় ধুপগুড়ি থানার পুলিশ । আজ তাঁকে শিলিগুড়ির কোরোনা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে । তাঁর সংস্পর্শে আসায় ধুপগুড়ি থানার দুই পুলিশ অফিসার-সহ পাঁচজনকে হোম কোয়ারানটিনে রাখা হয়েছে । শুধু তাই নয়, ভিন রাজ্যের আরও এক লরি চালক ও দুই খালাসিকেও আটক করেছে পুলিশ । তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়েছে ।
কয়েকদিন আগে চেন্নাই থেকে এক রোগীকে নিয়ে ত্রিপুরা যান ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক । তাঁর সঙ্গে আরও একজন ছিলেন । চেন্নাই ফেরার পথে ত্রিপুরার একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁদের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করা হয় । তবে রিপোর্ট আসার আগেই তাঁরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান । এরপর রিপোর্টে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সের চালক কোরোনা আক্রান্ত হয়েছেন । ত্রিপুরা প্রশাসনের কাছ থেকে এমন খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তরবঙ্গে সক্রিয় হয় পুলিশ । চলতে থাকে বিশেষ নজরদারি । গতরাতে জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ি থানার বামনি ব্রিজ এলাকা থেকে ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক ও সহযোগীকে আটক করে পুলিশ । রাতেই তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় । আজ দুপুরে অ্যাম্বুলেন্স চালককে শিলিগুড়ির কোরোনা হাসপাতালে ভরতি করা হয় । বর্তমানে ওই হাসপাতালে পাঁচজন রোগী ভরতি রয়েছে । যাঁদের মধ্যে দু'জন মালদার বাসিন্দা ।
পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ধুপগুড়ির বামনি ব্রিজের সামনে ওই অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়ায় । অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও খালাসি সেখানকার একটি দোকানের সামনে কিছুক্ষণ বসে ছিলেন । তাঁরা ওই দোকান থেকে জলের বোতলও কেনেন । তখন ধুপগুড়ি থানার দুই পুলিশ অফিসার ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক ও তাঁর সহকারীকে ধরেন । ধুপগুড়ি থানার সংশ্লিষ্ট দুই অফিসারকে 14 দিনের জন্য হোম কোয়ারানটিনে এবং ওই দোকানের ব্যবসায়ী-সহ আরও তিনজনকে কোয়ারানটিনে পাঠানো হয়েছে । রাতেই সংশ্লিষ্ট এলাকা জীবাণু মুক্ত করা হয় । তবে, কোরোনা আক্রান্ত ওই অ্যাম্বুলেন্স চালকের সংস্পর্শে আরও কতজন এসেছেন, তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দপ্তর । উত্তরবঙ্গে নিযুক্ত OSD সুশান্তকুমার রায় বলেন, "ওই অ্যাম্বুলেন্স চালকের সংস্পর্শে আসা সবাইকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে । দু’দিনের মধ্যেই এই কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি ।"
অন্যদিকে শিলিগুড়ির কাছে বিধাননগর থানার পুলিশ বিহারের পূর্ণিয়ার এক লরি চালক ও খালাসিকে আটক করেছে । তাঁদের বাড়ি পূর্ণিয়ায় । পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে ফল নিয়ে বিহারের পূর্ণিয়া হয়ে ওই লরি বিধাননগরে এসেছিল । এখান থেকে ফেরার পথে তাঁদেরকে ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ । ইতিমধ্যে তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে । বর্তমানে সেই ওয়ার্ডে তিনজন রোগী ভরতি । ডাঃ সুশান্তকুমার রায় বলেন, "ওই ঘটনা শুনেছি । ওই লরি চালক ও খালাসির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে ।"