শিলিগুড়ি,14 জুন : "সরকার আমাদের ৷ পুলিশ আমাদের, বিডিও আমাদের, ডিএম আমাদের, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের । একমাত্র তৃণমূল থাকবে ৷ কেউ নির্দল করতে পারবে না ৷ নির্দলদের ফিনিশ (শেষ) করে দেব । নির্দল বলে কিছু থাকবে না । কোনও বাড়িতে নির্দল প্রার্থী ঢুকলে আপনারা ভাগিয়ে দেবেন । আধ ঘণ্টার মধ্যে নির্দলদের জেলে পাঠাব । আর যারা নির্দলকে সাহায্য করবে তাদেরকেও জেলে পাঠাব ৷" এই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য দেবাশিস প্রামাণিকের বিরুদ্ধে । 26 জুন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচন । অভিযোগ, সোমবার রাতে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের চটহাটে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এই মন্তব্য করেন ওই তৃণমূল নেতা (allegation of threatening independent candidates against TMC Leader) ৷
এবারের মহকুমা পরিষদ নির্বাচন (Siliguri Mahakuma Parishad Election) পাখির চোখ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে । শিলিগুড়ি পৌরনিগমে ক্ষমতায় আসলেও এখনও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ দখল অধরা থেকে গিয়েছে রাজ্যের শাসকদলের কাছে ৷ শুরু থেকেই বামেদের দখলে ছিল এই মহকুমা পরিষদ ৷ কিন্তু এবার পালের হাওয়া অনেকটাই তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে । কিন্তু তা সত্ত্বেও টিকিট পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে ৷ শাসকদলের অনেকেই টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মহকুমা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এমনকি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক আসনে নির্দল হিসেবে লড়ছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূলরা ।
গত মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী তথা এবারেরও শাসকদলের প্রার্থী আইনুল হকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারই ভাইপো তথা ফাঁসিদেওয়া ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আখতাল আলি । সোমবারই তাঁকে দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস । অভিযোগ এইদিন রাতেই ফাঁসিদেওয়ায় প্রচারে গিয়ে হুমকি দেন দেবাশিস ৷ তাঁকে বলতে শোনা যায়, "দলে থাকবে, দল থেকে সুবিধা নেবে আর দলের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়াবে । এটা হবে না । সব নির্দলকে ফিনিশ করে দেব । আর যারা নির্দলদের সমর্থন করবে তাদের বাড়িতেও পুলিশ পাঠাব । এলাকায় যেন কোনও নির্দলের চিহ্ন না থাকে । নির্দলরা যেন কোনও মিটিং, মিছিল না করতে পারে৷ সমস্ত ফ্লেক্স, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলতে হবে । তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া এখানে কেউ থাকতে পারবে না ।"
আরও পড়ুন : শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল প্রার্থী, 32 জনকে বহিষ্কার করল তৃণমূল
দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ ওই তৃণমূল নেতার মন্তব্যের নিন্দা করেছেন ৷ বলেছেন, "এর দায় দল নেবে না ৷ এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত ৷ ধমকে চমকে ভোট করাকে আমরা সমর্থন করি না ৷ " নির্দল প্রার্থী আখতার আলি বলেন, "এটা গণতন্ত্র নয় । এলাকার মানুষ আতঙ্কিত । ভয়, আতঙ্কের রাজনীতিতে ভোট করাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস । এটা সংবিধানের অবমাননা করেছে । আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাব ।"