শিলিগুড়ি, 13 জুলাই : কলকাতায় ধৃত তিন জেএমবি জঙ্গি গ্রেফতারের ঘটনায় এবার উত্তরবঙ্গ জুড়ে নজরদারি বাড়াল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এবং স্পেশাল টাস্কফোর্স । ইতিমধ্যেই এই জঙ্গিদের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে পুলিশ কর্তাদের হাতে । ধৃত তিনজন জঙ্গিদের জেরা করে পুলিশ কর্তারা জানতে পেরেছেন রাজ্যে অন্তত আরও 10-12 জন জঙ্গি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে । এই তিনজন পুলিশের হাতে পাকড়াও হতেই বাকিরা গোপন ডেরায় আশ্রয় নিয়েছে বলে অনুমান করছে পুলিশ । যদিও এই জঙ্গিগোষ্ঠীর মূলত টার্গেট ছিল বাংলা-অসম সীমানা । ফলে অসম যেতে হলে শিলিগুড়ি হয়েই যেতে হবে, যার কারণে শিলিগুড়ির উপর বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা ।
ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের তরফে উত্তরবঙ্গে কড়া নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিশেষ সার্ভাইলেন্স রাখতে শুরু করেছে স্পেশাল টাস্কফোর্স এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ । বরাবরই শিলিগুড়ি উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হওয়ায় অপরাধীদের জন্য 'সফ্টটার্গেট' হিসেবে পরিচিত । কারণ শিলিগুড়ি থেকেই নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ তো বটেই এমনকি ভিন রাজ্য বিহার, অসম এবং সিকিমের মত জায়গায় সহজে যাতায়াত করতে পারা যায় । এদিকে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত পার করেই ভারতে প্রবেশ করেছিল এই জঙ্গিরা বলে ইতিমধ্যে পুলিশকর্তাদের জানিয়েছে । যার ফলে শিলিগুড়িতে আরও বাড়তি নজর দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে বলে ধারণা করছে রাজ্য পুলিশ ।
গত ছ'মাসে কারা কারা শিলিগুড়িতে এসেছে তার তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট । প্রত্যেকটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গত কয়েক মাসে কোন কোন এলাকায় নতুন ভাড়া এসেছে তার তালিকা নিয়ে ভাড়াটিয়াদের পরিচয় যাচাই করে দেখার । অন্যদিকে বিশেষ নজরদারিতে নেমেছে উত্তরবঙ্গের স্পেশাল টাস্কফোর্সের বিশেষ ইউনিট । ইন্দো-বাংলাদেশ এবং ইন্দো-নেপাল সীমান্তে জেলা পুলিশের সহায়তায় বিশেষ নজরদারির পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে নজরদারিতে নেমেছেন এসটিএফ কর্তারা । এছাড়াও মাদক পাচার এবং অস্ত্র পাচারের মত ঘটনার সঙ্গে যেসব অপরাধীদের নাম উঠে এসেছে তাদের ফের একবার বিশেষ নজরে রেখে জেরা শুরু করেছে এসটিএফ । নিউ জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি জংশন সহ বিভিন্ন রেল স্টেশনেও বিশেষ নজরদারির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জিআরপিকে । ইতিমধ্যে ইন্দো-বাংলাদেশ এবং ইন্দো-নেপাল সীমান্ত দিয়ে পারাপারকারীদের গত কয়েক মাসের তালিকা বিএসএফ এবং এসএসবির কাছে চেয়ে পাঠানো হয়েছে এসটিএফের তরফে । অন্যদিকে এই ঘটনার পরেই, শহরের সাতটি প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে নাকা তল্লাশি।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের সঙ্গে ভবিষ্যতে জোটের সম্ভাবনা নস্যাৎ সূর্যকান্তের
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ডিসিপি জয় টুডু বলেন, " গত কয়েক মাসে শহরে কারা কারা ভাড়া এসেছে এবং নতুন করে ভাড়া নিয়েছে তাদের তালিকা যাচাই করে দেখা হচ্ছে । কলকাতায় ঘটনার পরে শহরজুড়ে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে । ২৪ ঘন্টা শহরের সাতটি প্রবেশদ্বারে নাকা তল্লাশি বসানো হয়েছে ।"