শিলিগুড়ি, 27 জুন: সাপের বিষের পর এবার পাচারকারীদের নজরে সাপের তেল! সঙ্গে হরিণের শিং ও চামড়া! এসব বন্যপ্রাণ সামগ্রী পাচারের আগে রুখে দিয়ে বড়সড় সাফল্য পেল বনবিভাগ। বনবিভাগের তৎপরতায় শিলিগুড়িতে বনদফতরের জালে ধড়া পড়ল দুই আন্তর্জাতিক পাচারকারী। তাদের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে স্পেকট্যাকল কোবরার তেল। এখানেই শেষ নয়, ধৃতদের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে হরিণের চামড়া এবং শিং। যার বাজারমূল্য কোটি টাকা । পুরো ঘটনায় জোর তদন্ত শুরু করেছে দার্জিলিং বনবিভাগের র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স দার্জিলিং ওয়াইল্ড লাইফের 1 নম্বর শাখা।
শহর শিলিগুড়িকে করিডোর করে পাচার কোনও নতুন কথা নয়। শিলিগুড়িকে করিডোর করে বন্যপ্রাণ পাচারের ছক কষে থাকে পাচারকারীরা। যদিও বন দফতর-সহ পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের তৎপরতায় সেসব ছক বানচাল হয়। এবারও তার অন্যথা হল না। বন দফতরের র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স দার্জিলিং ওয়াইল্ড লাইফের 1 নম্বর শাখার রেঞ্জার দীপক রসেইলি ও তার টিমের তৎপরতায় উদ্ধার হল স্পেকট্যাকল কোবরা তেল-সহ হরিণের শিং এবং চামড়া। ঘটনায় শিলিগুড়ি জংশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ভিন রাজ্যের দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় 20 লক্ষ টাকার ব্রাউন সুগার-সহ গ্রেফতার 2
ধৃতরা সিকান্দার কুমার এবং সঞ্জু বৈধ। ধৃতদের মধ্যে সিকান্দার উত্তরপ্রদেশের খলিলাবাদ এলাকা এবং সঞ্জু বিহারের কাটিহারের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তির উপর দীর্ঘদিন ধরেই বন দফতরের নজর ছিল। শেষ পর্যন্ত সোমবার গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শিলিগুড়ি জংশন এলাকা থেকে তাদের পাকড়াও করা হয়। প্রাথমিকভাবে খবর মিলেছে বন্যপ্রাণের দেহাংশ-সহ সাপের তেল পাচারের ছক ছিল ধৃতদের।
তাদের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা তেলের ওজন আনুমানিক 350 মিলিলিটার। এছাড়াও ছিল চারটি টুকরো করা হরিণের চামড়া এবং তিন টুকরো হরিণের শিং। উদ্ধার হওয়া বন্যপ্রাণী সামগ্রীর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা। ঘটনাপ্রসঙ্গে, র্যাপিড রেসপন্স ফোর্সের রেঞ্জ অফিসার দীপক রসাইলি বলেন, "দু'জন গ্রেফতার হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: বাজেয়াপ্ত মাদক বিক্রি, কারবারীকে মুক্তির অভিযোগ ! সাসপেন্ড দুই পুলিশ অফিসার
ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, মায়ানমার থেকে ওই বন্যপ্রাণ সামগ্রী আনা হয়েছিল। অসম থেকে বৃহস্পতিবার ধৃতরা ওই বন্যপ্রাণ সামগ্রী নিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছয়। শিলিগুড়িতে হাত বদলে সেগুলি নেপাল হয়ে চিনে পাচার হত। সাপের তেল মূলত থাইল্যান্ড, ব্যাংকক, চিনের মতো জায়গায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যৌবন, চামড়ার ক্যানসার, চুলের চিকিৎসায় অনলাইনে বিক্রি হয়ে থাকে। কালো বাজারে 5 মিলিলিটার সাপের তেলের মূল্য 20 থেকে 30 হাজার টাকা। সবথেকে বেশি দামি এই কোবরা সাপের তেল।