হরিরামপুর, 17 ডিসেম্বর : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর ব্লকে গতকাল সন্ধ্যাবেলা NRC এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA)-এর প্রতিবাদে মিছিল বের হয় । সেই মিছিল চলাকালীন অভিযোগ তৃণমূল কর্মীরা BJP পার্টি অফিস এবং কিছু কর্মীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে । সেই কারণে বালুরঘাটের BJP সাংসদ সুকান্ত মজুমদার হরিরামপুর ব্লকে যান এবং সেখানে গিয়ে ভাঙাচোরা পার্টি অফিস ও যে সমস্ত কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর হয় তাঁদের বাড়িতে যায় এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ৷ সেই ঘটনায় গতকাল হরিরামপুর থানায় শুভাশিস পাল ও বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং গঙ্গারামপুর মহাকুমার পুলিশ আধিকারিক দীপ কুমার দাসকে নির্দেশ দেন খুব তাড়াতাড়ি যেন অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ যেন ব্যবস্থা নেয় ।
BJP সূত্রে খবর, হরিরামপুর ব্লক A BJP-র দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা, পরে BJP-র ফেস্টুনে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ । কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করে জেলা পরিষদের মেন্টর শুভাশিস পাল । রবিবার NRC এবং CAA নিয়ে তৃণমূলের মিছিল চলার সময় তৃণমূল কর্মীরা হরিরামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় BJP পার্টি অফিস ভাঙচুর করে এবং সেইসঙ্গে গোপালপুর এলাকায় BJP কর্মী বিধান সরকারের বাড়ি ও তার দোকান ভাঙচুর চালায় এবং বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে । সেই কারণে গতকাল বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার হরিরামপুরে যান এবং সেখানে গিয়ে হরিরামপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় থাকা BJP-র দলীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন এবং সেখানে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তৃণমূলের কারা কারা ছিল কারা ভাঙচুর চালায় সেই সমস্ত বিষয় খোঁজ নেন এবং পাশাপাশি যে দলীয় কর্মীর বাড়ি এবং দোকান সহ পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এবং তৃণমূল কর্মীদের নামে হরিরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং পুলিশকে খুব তাড়াতাড়ি যেন ব্যবস্থা নাই সেই সমস্ত বিষয়ে জানিয়ে আসে ।
বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের দাবি, ''রবিবার তৃণমূলের মিছিলে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক নানারকম জিনিস ছিল এবং সেই মিছিল চলার সময় BJP পার্টি অফিস ভাঙচুর চালায় এবং ভারতমাতা মূর্তিসহ আসবাবপত্র, মহাপুরুষদের ছবি রাস্তার মাঝখানে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং মিছিল ফেরত যাবার সময় রাস্তার ধারে যে সমস্ত কর্মীদের বাড়ি এবং থাকবে লাগানো ছিল BJP-র তাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় এবং বাড়ির মহিলাদের জিনিসপত্র কেড়ে নিয়েছে এবং শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করা হয় । সেই বিষয়ে হরিরামপুর থানা একদম চুপচাপ বসে আছে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না এখনও পর্যন্ত কোনও FIR ও নেয়নি এবং আমরা এসেছি থানায় অভিযোগ দায়ের করার জন্য এবং এখানে কারো নাগরিকত্ব বাদ যাবে না বাংলাদেশ থেকে যারা উদ্বাস্তু তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে কিন্তু আমাদের এখানে তৃণমূলের নেতা শুভাশিস পাল উসকানিতে এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উসকানিতে নৈরাজ্য চলছে মুসলিমদেরকে ভুল বোঝানো হচ্ছে এবং কোথাও লেখা নেই তাদেরকে তাড়ানো হবে ।''
তাঁর কথায়, ''তৃণমূলের কোনও নেতা যদি কোথাও দেখা দেখাতে পারে তাহলে আমরা রাজনীতি ছেড়ে দেব কোথাও লেখা নেই যে সংখ্যালঘুদেরকে তাড়ানো হবে৷ আমি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের বলব, যদি ভারতবর্ষকে বাঁচাতে চান তাহলে তৃণমূলের এই নোংরা চক্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসুন আর নাহলে ভারতবর্ষ বাঁচবে না । এবং আমি প্রশাসনকে বলব সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা যেন সৃষ্টি না হয় ।''
এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা শুভাশিস পালের বক্তব্য, ''রবিবার আমরা যখন তৃণমূলের মিছিল নিয়ে যাচ্ছি সেসময় আমরা দেখি BJP পার্টি অফিসের ভিতরে এসব চলছে এবং সেই ছবি আজকে বিভিন্ন পেপারে বেরিয়েছে এবং পেপারে বড় পতাকার ছবি দেখলেই বোঝা যাচ্ছে কারা এর সঙ্গে জড়িত।''