বালুরঘাট, 20 ফেব্রুয়ারি: মৃত্যু হয়েছে মায়ের ৷ বালুরঘাটে মায়ের মরণোত্তর চক্ষুদান এবং দেহদান করলেন এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক । অন্যান্যদেরও এই কাজে এগিয়ে আসতে বললেন তিনি । বালুরঘাটের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রয়াস আত্রেয়ীর সহযোগিতায় এই কাজ হয় ।
বালুরঘাট শহরের বেলতলাপার্ক এলাকার দুর্গাবাড়ির বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক বিভাস দাস । তাঁর মা অঞ্জলি দাসের গতকাল বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় । তাঁর মৃত্যুর পরে বিভাস দাসের তৎপরতায় অঞ্জলিদেবীর মরণোত্তর চক্ষুদান করা হয় । এরপর বিভাসবাবু নিজ উদ্যোগে মায়ের দেহ নিয়ে যান মালদা মেডিকেল কলেজে । সেখানে অঞ্জলিদেবীর দেহ দান করেন ।
2017 সালে বিভাসবাবুর বাবার মৃত্যুর পরে তাঁর মায়ের স্নায়ু রোগের সমস্যা দেখা দেয় । এরপর বহু স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন তিনি । বিভিন্ন জায়গায় মায়ের চিকিৎসা করান । আলিপুর হাসপাতাল থেকে শুরু করে লখনউ হাসপাতালেও চিকিৎসা চলে । এদিকে স্নায়ু রোগের কবলে পড়ে দীর্ঘ দু'বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন অঞ্জলি দেবী ৷ মঙ্গলবার সকাল 8টা নাগাদ অঞ্জলি দেবীর মৃত্যু হয় । এদিকে বালুরঘাটের প্রয়াস আত্রেয়ীতে বিভাসবাবু এবং তাঁর মায়ের 2011 সালে মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার ছিল । যথারীতি মায়ের মৃত্যুর পরে দেরি না করে ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিভাসবাবু । সংস্থার তরফে ডাক্তার রামেন্দু ঘোষ ও তাঁর দু'জন সহকারী মিলে দক্ষতার সঙ্গে অঞ্জলি দেবীর দুটো কর্নিয়া সংগ্রহ করেন।
মঙ্গলবারই কর্নিয়া দুটি কলকাতায় পাঠানো হয়েছে । সেখানে দু'জন জন্মান্ধ ব্যক্তির চোখে কর্নিয়া দুটি প্রতিস্থাপন করা হবে । এবিষয়ে পেশায় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক বিভাস দাস বলেন, "2011 সালে মায়ের মরণোত্তর চক্ষুদান এবং 2013 সালে মায়ের মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার হয়েছিল । মায়ের মৃত্যুর পর তাঁর দেহের সৎকার না করে চক্ষু ও দেহদান করি । কেউ দৃষ্টি শক্তি পাবেন । উপকার হবে চিকিৎসা শাস্ত্রেও ।" পাশাপাশি তিনি নিজেও মরণোত্তর চক্ষুদান এবং দেহদানের অঙ্গীকার করেছেন বলে জানান ।