বংশীহারী, 5 ডিসেম্বর : বংশীহারী ব্লকের গাংগুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু জুনিয়র হাই স্কুলে বন্ধ মিড ডে মিল । অভিযোগ, বংশীহারী সার্কেলের SI (স্কুল ইন্সপেক্টর) মোরশেদ আলম সরকার গত কয়েক মাস আগে তিনি একটি নোটিশ জারি করেন । তাতে জানান, বেশ কয়েকটি জুনিয়র হাই স্কুলের দায়িত্বে থাকা সেক্রেটারি পদে তিনি আর থাকবেন না । তিনি দায়িত্বে না থাকলে সেক্রেটারির দায়িত্ব নিতে হবে বিভিন্ন স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের । আর এতেই বাঁধে বিপত্তি । সংশ্লিষ্ট জুনিয়ার হাই স্কুলের শিক্ষকরা SI-কে লিখিতভাবে জানান, এই দায়িত্ব তাঁরা পালন করতে পারবেন না । আর এরপরই সমস্যায় পড়ে জুনিয়ার হাই স্কুলগুলি । সেই থেকেই বংশীহারী ব্লকের বিভিন্ন জুনিয়র হাই স্কুলে বন্ধ মিড ডে মিল ।
স্কুলগুলির মধ্যে রয়েছে সিসা জুনিয়র হাই স্কুল । যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা 128 আর শিক্ষকের সংখ্যা ৪ । যার ফলে কোনও শিক্ষকের পক্ষে সেক্রেটারির দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব হয়নি । এই স্কুলের শিক্ষক দীপঙ্কর দত্ত বলেন, "স্কুলের সেক্রেটারি অর্থাৎ সার্কেলের SI মোকসেদ আলম সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ এবং আরও অন্যান্য স্কুলে । বংশীহারী সার্কেলের SI মোকসেদ আলম সরকার আমাদেরকে লিখিতভাবে জানান যে তিনি স্কুলের দায়িত্বে থাকা সেক্রেটারি পদে থাকবেন না । সেই দায়িত্ব নিতে হবে স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের ।এই সিদ্ধান্ত আমরা মানব না আর সেই কারণেই বন্ধ আমাদের মিড ডে মিল । অনেক কষ্ট করে অগাস্ট মাসে মিড ডে মিল চালিয়েছি । ধারদেনা করে চালিয়েছি । কিন্তু দোকানদাররা আমাদের কাছে টাকা চায়, আমরা কিভাবে টাকা দেব ? "
এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবতোষ হেমব্রম বলেন, "আমাদের স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ । স্কুলের অপারেটর হিসেবে সই করেছেন বংশীহারী সার্কেলের SI মোরশেদ আলম সরকার কিন্তু তিনি আর সই করবেন না তিনি চেয়েছেন যে আমাদের স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা এই দায়িত্ব নিক । কিন্তু সেটার কোনও সরকারি নির্দেশ নেই । সরকারের নির্দেশে বলা আছে বংশীহারী সার্কেলের SI- কে এই দায়িত্ব নিতে হবে । আমার স্কুলের কেউ এই দায়িত্ব নিতে চাই না সেই কারণে আমি মিড ডে মিল বন্ধ রয়েছে । আমার সবথেকে বড় অসুবিধা হচ্ছে বাচ্চাদেরকে আমি খাওয়াতে পারছি না । তারা অনেক সকালবেলা স্কুলে উদ্দেশে বের হয় । সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে যাদের বিল আটকে পড়ে আছে তাদের আর কতদিন থামিয়ে রাখব । কোনও সময় আমার উপর হামলা চালাবে । আমি সেই কারণে বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি এবিষয়ে কিন্তু কোনও কাজ হয়নি । আমাদের সেক্রেটারি সাহেব একটার পর একটা কাগজের কথা বলে যাচ্ছে আমি সেগুলো রেডি করছি কিন্তু তাও তিনি গায়ে লাগাচ্ছেন না ।"
এই বিষয়ে স্কুলের ছাত্রী সোনালী মহান্ত বলে, "আমরা অনেক সকালে বাড়ি থেকে বেরোই স্কুলে আসার জন্য । খিদে পেয়ে যায় । কিন্তু প্রায় আড়াই মাস হতে চললো আমাদের স্কুলের মিড ডে মিল বন্ধ । সেকারণে খিদে পেলে শিক্ষকদের বলে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় । আমরা চাই খুব তাড়াতাড়ি মিড ডে মিল চালু হোক ।"