কুশমন্ডি, 1 নভেম্বর: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম ও ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির হল কুশমন্ডি ব্লকের আমিনপুরের 'মা মাটিয়া কালী।' দীপান্বিতা অমাবস্যায় পূজিত হন মা। দীর্ঘ 500 বছর ধরে 'মা মাটিয়া কালীর' পুজো হয়ে আসছে। তবে আজও মায়ের কোনও মন্দির নেই, মাটির থানেই পুজো হয় মায়ের। আবার মাটিতেই মিলিয়ে যান মা।
ইংরেজ আমলের পূর্বে অবিভক্ত ভারতে প্রায় 500 বছর আগে জমিদার যোগেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরীর উদ্যোগে শুরু হয় এই কালীপুজো। কথিত আছে, স্বপ্নাদেশে মায়ের আদেশের কারণেই কোনও মন্দির করা হয়নি। সেই সময় থেকেই মায়ের পুজো হয় মাটিতে। এমনকি মা মাটিতে থাকার কারণে জমিদার বংশের সকলেই নাকি মাটিতেই শয়ন করতেন। ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় রটন্তী কালী নামে মায়ের পুজো করে জয়লাভ করেছিল জমিদার বংশ। যদিও পরে মাটিতে থাকার কারণে এই রটন্তী কালী এলাকাবাসীর কাছে 'মা মাটিয়া কালী' নামে পূজিত হন। এলাকার সকলেই যে কোনও শুভ কাজ শুরু করার আগেই মায়ের পুজো দেন। যে কোনও মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্য 'মা মাটিয়া কালীর' থানের মাটি তুলে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে এলাকায়।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় মায়ের পুজোর সময় দূরদূরান্ত থেকে ভক্তের সমাগম হয়, চলে মেলাও। 'মা মাটিয়া কালীর' থানের ঈশাণ কোণে রয়েছে ভগ্নদশা একটি ঘর। যেখানে এক সময় মায়ের সাজগোজের গহনা রাখা হত। তার পাশেই রয়েছে পঞ্চমুখী শিব। যদিও মায়ের মন্দির না করলেও পঞ্চমুখী শিবের জন্য করা হয়েছে মন্দির। অনেকেই জানেন না, কুশমন্ডি ব্লকের আমিনপুরে রয়েছে পাঁচমাথা শিব মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত আছে, এই পাঁচমাথা শিব মন্দিরের ইতিহাস 217 বছরেরও পুরোনো। দূর-দুরান্ত থেকে দর্শনাথীরা আসেন আমিনপুরে এখানকার শিবমন্দির আর 'মা মাটিয়া কালির' দর্শন করতে।
আরও পড়ুন: ডিজাইনার প্রদীপ তৈরি করে অন্ধকার ঘোচাতে তৎপর দুলালী
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা কমলাপদ সিংহ জানান, দীপান্বিতা অমাবস্যায় পূজিত হন মা। 500 বছর ধরে 'মা মাটিয়া কালীর' পুজো হয়ে আসছে। তবে আজও মায়ের কোনও মন্দির নেই, মাটির থানেই পুজো হয় মায়ের। আবার মাটিতেই মিলিয়ে যান মা। কৃষ্ণপদ বর্মন নামে অপর এক শিক্ষক জানান, 'মা মাটিয়া কালি' কুশমন্ডি থানার আমিনপুর গ্রামে পুজো হয়ে থাকে মায়ের। এলাকার সকলেই যে কোনও শুভ কাজ শুরু করার আগেই মায়ের পুজো দেন।