বংশীহারী, 19 এপ্রিল : ছেলে কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন । মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । আয় বলতে সেভাবে কিছু নেই । ছেলের পাঠানো সামান্য টাকা আর প্রতিবেশীদের সাহায্যে কোনওমতে দিন কাটে বৃদ্ধার । কিন্তু লকডাউনের জেরে আজ তা'ও বন্ধ । টাকা আসছে না ছেলের কাছ থেকে । পাননি সরকারি সাহায্যও । ফলে কোনওদিন একবেলা খেয়ে, কোনওদিন অনাহারে দিন কাটছে বছর 80-র লক্ষ্মী টুডুর ।
লকডাউনে গৃহবন্দী মানুষজন । কাজ নেই বহু লোকের । খাওয়া জুটছে না বা অর্ধাহারে দিন কাটছে, রাজ্যে এমন মানুষের সংখ্যা অগুনতি । এই পরিস্থিতিতে এদিক ওদিক থেকে চেয়ে বা পরের নির্ভরতায় যাঁরা বাঁচতেন তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ । রাস্তাঘাটে প্রায় সবকিছুই বন্ধ থাকায় খাবার জোগাড় করাটাই এখন একটা চ্যালেঞ্জ । দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারীর বাসিন্দা লক্ষ্মী টুডুরও একই অবস্থা ।
মহাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সমাস পুর এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মী টুডু । মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে । ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন । একটু-আধটু এদিক ওদিক থেকে চেয়ে খাবার জোটে বৃদ্ধার । ছেলেও কিছু টাকা পাঠান । কিন্তু লকডাউনের জেরে তিনিও টাকা পাঠাতে পারছেন না । বন্ধ এলাকার দোকানপাটও । পাননি প্রশাসনের সাহায্যও । ফলে অর্ধেক দিন না খেয়েই দিন কাটছে বৃদ্ধার । লকডাউনের সময়সীমা বাড়ায় এখন চিন্তার ভাঁজ বৃদ্ধার কপালে । এখন আর্জি, প্রশাসনের তরফে যদি কিছু সাহায্য পান তিনি ।
এবিষয়ে লক্ষ্মী টুডু বলেন, "আমি প্রায় দিনই না খেয়ে থাকি । পঞ্চায়েত বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও সাহায্য পাইনি । লকডাউনের জন্য বাড়ির বাইরে বের হই না । আমাকে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি ।"
এবিষয়ে তাঁর প্রতিবেশী পরিতোষ মণ্ডল বলেন, "আমরা মাঝে মধ্যে ওঁকে সাহায্য করি । তাতেই চলে । কিন্তু এই লকডাউন পরিস্থিতিতে এভাবে কতদিন চলবে । প্রশাসনের তরফে যদি কিছু সাহায্য করা যেত তাহলে উনি বেঁচে যেতেন ।"