হিলি, 31 মে : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর । ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এটি । এই পথ দিয়েই প্রতিদিন ট্রাক বোঝাই পাথর, পেয়াঁজ, জিরা রপ্তানি হত বাংলাদেশে । প্রত্যেকদিন গড়ে 200-250 লরি ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য সামগ্রী নিয়ে যায় । ভারতীয় মুদ্রায় এক দিনে গড়ে 15-20 কোটি টাকার ব্যবসা হত এই পথে । জেলার কম-বেশি প্রায় 100 জন ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা বাংলাদেশে পণ্য সামগ্রী আমদানি ও রপ্তানির সঙ্গে জড়িত । ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি যুক্ত রয়েছেন প্রায় 8-10 হাজার ট্রাকচালক, খালাসি ও কর্মচারী ।
কিন্তু এখন সময় বদলেছে । হিলিতে নেই সেই চেনা ব্যস্ততা । চেকপোস্টগুলি যেন আজ বড্ড নিঃসঙ্গ । টানা চলতে থাকা লকডাউনে বন্ধ রয়েছে আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন । সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক । লকডাউন চালু হওয়ার পর 26 মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে স্থলবন্দর । আটকে পড়েছে প্রায় তিন'শো লরি । সংকটে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্য । ভারতীয় মুদ্রায় ক্ষতির অঙ্কটা প্রায় এক হাজার কোটি টাকা । দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ স্থলবন্দর । বিপাকে প্রায় 8-10 হাজার ট্রাকচালক, খালাসি ও কর্মচারী ।
হিলি স্থলবন্দর পুরোপুরি বন্ধ হতেই 512 নম্বর জাতীয় সড়কের দু'পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে তিন'শোরও বেশি ট্রাক । এরমধ্যে বেশির ভাগ লরিতেই রয়েছে পণ্যসামগ্রী । শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি নয়, ক্ষতি হচ্ছে সরকারি রাজস্বেরও । এমতাবস্থায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হিলি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি ও রপ্তানির ব্যবস্থা দ্রুত চালু হোক । এমনই আবেদন জানিয়েছে হিলি এক্সপোর্টারস এন্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ।
এ-বিষয়ে হিলি এক্সপোর্টারস এন্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জিত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, "লকডাউনের কারণে গত 26 মার্চ থেকে হিলি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে । এর ফলে দু'মাসে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায় । শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে এমনটা নয়, ক্ষতি হয়েছে সরকারি রাজস্বেও ।" তাই খুব বেশি না হলেও অল্প সংখ্যক গাড়ি চলাচলের মাধ্যমেই হিলি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর খোলার আবেদন জানিয়েছেন সঞ্জিতবাবু । এ-নিয়ে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা । হিলি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর চালু হলে সরকারি নির্দেশিকা মেনে তাঁরা কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন । যদিও এবিষয়ে জেলা শাসক নিখিল নির্মল জানান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ব্যাপারে তাদের কাছে এখনও কোনো খবর নেই । যেমন সরকারি নির্দেশিকা পাবেন সেই মতো তাঁরা কাজ করবেন ।