বালুরঘাট, 15 অক্টোবর : বালুরঘাটে সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে আনা গাফিলতির অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য শিশুর পরিবারকে হুমকি ৷ অভিযুক্ত চিকিৎসক ৷ যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ৷
বৃহস্পতিবার রাত বারোটা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি হন অর্পিতা দাস ৷ শুক্রবার সকালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ৷ সিজ়ারের পর মা ও সন্তান দু'জনেই ভালো ছিল ৷ এরপর রবিবার সকালে শিশুর পরিবারকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয় ৷ জানানো হয় গলায় খাবার (দুধ) আটকে মারা গেছে শিশু ৷ কাপড়ে মুড়িয়ে মৃত শিশুকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে ৷ সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে গিয়ে কাপড় খুলতেই নজরে আসে শিশুর মুখের বাঁদিকে ও হাত-পায়ে রয়েছে ক্ষত চিহ্ন ৷ এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকজন ৷ বালুরঘাট থানার ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷
আরও পড়ুন : হাসপাতালের সদ্যোজাতের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ
শিশুর পরিবারের অভিযোগ, গতকাল বালুরঘাট থানায় দায়ের করা সেই অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হয় তাদের ৷ গলায় খাবার (দুধ) আটকেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷ এটা লিখিতভাবে সর্বত্র চিঠি দিয়ে জানাতে হবে বলেই জানান স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন কুমার মুস্তাফি ৷ এমন কী অভিযোগ না তুলে নিলে মৃত শিশুর বাবা সাধন দাসের জেল হেপাজত পর্যন্ত হতে পারে বলে হুমকি দেন ৷
গতকাল মৃত শিশুর ঠাকুরদা সুনীল দাস রঞ্জনবাবুর চেম্বারে গিয়ে অর্পিতাকে ছুটি দেওয়া যাবে কি না জানতে চান ৷ সে সময় তিনি এই হুমকি দেন বলে অভিযোগ ৷ সুনীলবাবু বলেন, "চার জায়গায় চিঠি দিতে বলেন ডাক্তারবাবু ৷ লিখতে বলেন দুধ খেতে গিয়েই বাচ্চাটি মারা গেছে ৷ এটা না করলে স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত ব্যাপারটা চলে গেছে ৷ অর্পিতার স্বামীকে পাঁচ বছর জেলের ঘানি টানতে হতে পারে ৷ " তিনি আরও বলেন, "ডাক্তারবাবুর বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ ছিল না ৷ আমাদের মূল অভিযোগ ছিল হাসপাতালের আয়া, নার্স ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৷ " যে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেখানেই ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ৷ তাই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট কতটা সঠিক সে নিয়ে কি কোনও সন্দেহ রয়েছে তাঁর ? উত্তরে সুনীলবাবু বলেন, " পোস্টমর্টেম রিপোর্ট চেঞ্জ করতে পারে ৷ বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে ৷ সঠিক রিপোর্ট নাও দিতে পারে ৷ "
অন্যদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন রঞ্জনবাবু ৷ তিনি বলেন, শিশুর পরিবারের সদস্যরা রোগীর ছুটির জন্য তাঁর কাছে গেছিলেন ৷ যেহেতু হাসপাতাল সুপারের অনুমতি ছাড়া ছুটি দেওয়া যায় না ৷ তাই তিনি ছুটি দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন । পরে অবশ্য সুপারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন ৷ তিনি নির্দেশ দেন অন রিকোয়েস্ট রোগীকে ছুটি দেওয়া যেতে পারে । পরিবারের লোকজনকে হুমকি বা ভয় দেখানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি ।