বালুরঘাট, 13 অক্টোবর : হাসপাতালে সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক ৷ হাসপাতালের বিছানা থেকে পড়ে যায় শিশুকন্যাটি, তাতেই মৃত্যু এমন অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার৷ এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্তন্যপানের সময় শ্বাস আটকে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির ৷ আজ বিকেলে ঘটনাটি ঘটে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসেন বালুরঘাট থানার IC জয়ন্ত দত্ত ৷ থানা ও হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে মৃত সদ্যোজাতর পরিবার ৷ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে হাসপাতালের তরফে ৷
বালুরঘাট থানার অমৃতখণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের অযোধ্যা এলাকায় বাড়ি সাধন দাসের ৷ পেশায় কৃষিজীবী তিনি ৷ প্রায় বছর খানেক আগে বালুরঘাট থানার নুনইল এলাকার অর্পিতা দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় সাধনের ৷ বৃহস্পতিবার রাত 12 টা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি হন অর্পিতা৷ শুক্রবার সকালে সিজ়ারিয়ান অস্ত্রোপচারের পর কন্যাসন্তানের জন্ম দেন অর্পিতা ৷ মা ও শিশু দু'জনই সুস্থ ছিল ৷
আজ সকালে হঠাৎই হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয় সদ্যোজাতর পরিবারকে ৷ জানানো হয়, সদ্যোজাত শিশুর গলায় খাবার (দুধ) আটকে মারা গেছে ৷ কাপড়ে মুড়িয়ে মৃত শিশুকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে ৷ সৎকারের জন্য শ্মশানে নিয়ে গিয়ে কাপড় খুলতেই নজরে আসে শিশুর মুখের বাঁদিকে ও হাত-পায়ে রয়েছে ক্ষত চিহ্ন ৷ এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকজন ৷ বালুরঘাট থানার ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা ৷ আজ রবিবার, তাই হাসপাতাল ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাতে পারেনি পরিবারের লোকজন ৷ মৃত শিশুর ময়নাতদন্তও করা হয় হাসপাতালে ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতালে চত্বরে মোতায়েন করা হয় পুলিশও ৷
মৃত শিশুর আত্মীয় পলি দাস ও শমিতা দাস বলেন, ''গতরাতে হাসপাতালে চত্বরে আলোচনা চলছিল কোনও শিশু পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছে ৷ আজ সকালে জানানো হয়, গলায় মায়ের দুধ আটকে মৃত্যু হয়েছে ৷ গলায় খাবার আটকে মারা গেলে শরীরে ক্ষতচিহ্ন থাকার কথা নয় ৷''
হাসপাতালে সুপার থেকে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি । তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, বিছানা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়নি শিশুটির । শুইয়ে দুধ খাওয়ানোয় গলায় খাবার আটকে এই অঘটন ঘটে । অন্যদিকে এ বিষয়ে বালুরঘাট থানার IC জয়ন্ত দত্ত জানান, ঘটনার অভিযোগ পেয়েছেন । খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।