উস্থি (দক্ষিণ 24 পরগনা), 25 জানুয়ারি: থানা চত্বরেই তৃণমূলের বিধায়কের দাদাগিরি ! একটি খুনের ঘটনায় এক ঘনিষ্ঠকে আটক করায় উস্থি থানায় ঢুকে দাদাগিরি করার অভিযোগ উঠল মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক গিয়াসউদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে (TMC MLA Giasuddin Molla used disrespectful language to SDPO) ৷ বিধায়কের 'কীর্তি'র ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায় (Viral Video) ৷ তাতে মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে (এসডিপিও) '2 টাকার চাকর', 'ছোটেলোক' বলে সম্বোধন করতে শোনা গিয়েছে বিধায়ককে ৷ যদিও ইটিভি ভারত ওই ভাইরাল ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ৷ কিন্তু, ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা ইমরান হুসেন মোল্লা ৷ অন্যদিকে, বিধায়কের সমালোচনায় সরব হয়েছে গেরুয়াশিবির ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার একটি খুনের ঘটনায় বিধায়কের ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে উস্থি থানায় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেই খবর পেয়েই কয়েকজন অনুগামীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় ঢুকে পড়েন গিয়াসউদ্দিন মোল্লা ৷ সেই সময় থানায় উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে ৷ তাঁর সঙ্গে রীতিমতো তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায় বিধায়কের ৷ তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলে পুলিশ ৷ সেই সময়েই থানায় ঢোকার সিঁড়িতে বসে এসডিপিওকে '2 টাকার চাকর', 'ছোটেলোক' বলে সম্বোধন করেন বিধায়ক !
আরও পড়ুন: দাদাগিরি তৃণমূল নেতার, সবজি বিক্রেতাকে বাঁশপেটা! ভাইরাল ভিডিয়ো
বিধায়কের মুখে এমন সম্বোধন শুনে প্রতিবাদ করেন এসডিপিও ৷ তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করেন ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সুপার ধৃতিমান সরকারের সঙ্গে ৷ ভাইরাল ভিডিয়োয় এসডিপিওকে বলতে শোনা গিয়েছে, "এলাকার দুষ্কৃতীদের আপনি সমর্থন করছেন ! পুলিশকে তার কাজ করতে দিন ৷ অভিযুক্তদের আপনি আড়াল করবেন না ৷" পরে অবশ্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা থেকে চলে যান এসডিপিও ৷ কিন্তু, সূত্রের দাবি, একজন বিধায়কের মুখে এমন মন্তব্য শুনে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা ৷ বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তৃণমূলের শীর্ষস্তরে জানানো হবে বলেও পুলিশ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে ৷
গোটা ঘটনায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় যুবনেতা ইমরান হুসেন মোল্লা এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের বিধায়ক ও কর্মীদের সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যে পুলিশকে তার কাজ করতে দিতে হবে ৷ আমাদের দলের বিধায়ক মাননীয় গিয়াসউদ্দিন মোল্লার এই আচরণের জন্য আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ৷"
তবে, ক্ষমা প্রার্থনা করেও বিতর্ক থামছে না ৷ স্থানীয় বিজেপি নেতা সুফল খাটুয়া যেমন এ নিয়ে বলেন, "ইদানীংকালে বহুবার পুলিশকে কার্যত রাজ্য সরকারের দলদাস হয়ে কাজ করতে দেখা গিয়েছে ৷ কিন্তু পরিস্থিতি এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে ৷ ভোটের আগে পুলিশ সক্রিয় হতেই বিধায়ক ও শাসকদলের নেতারা পুলিশ প্রশাসনের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ ৷ তাই এমন ঘটনা ঘটেছে ৷ আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি ৷"