ভাঙড়, ১ এপ্রিল : "কোনও ভাবে কোনও বুথে যেন বিরোধী এজেন্ট না থাকে সেটা আমাদের নজরে রাখতে হবে।" পঞ্চায়েত অফিসে কৃষকদের চেক বিলি করার সময় আজ একথা বলেন ভোগালীর তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান মোদাসসর হুসেন। সূত্রের খবর, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
আজ ভাঙড়-২ ব্লকের ভোগালী-২ পঞ্চায়েত অফিস থেকে "কৃষক বন্ধু" প্রকল্পে চেক বিলি করছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান। সেখানে তিনি বলেন, "আমাদের এগারো হাজার ভোটার। প্রত্যেক ভোট যেন আমাদের বাক্সে পড়ে।"
"কৃষক বন্ধু" প্রকল্পে আর্থিক অনুদানের অর্থ আগেই অনুমোদিত হয়েছিল। সেই অর্থ আজ পঞ্চায়েত অফিস থেকে উপভোক্তাদের দেওয়া হচ্ছিল। আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধির তোয়াক্কা না করে কৃষকদের চেকের বিনিময়ে তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীকে ভোট দিতে বলেন মোদাসসর। ভোট না দিলে ভোটারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। সরকারি চেক রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে কী করে বিলি হল, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। চেক বিলি করার সময়ে পঞ্চায়েত প্রধান কৃষকদের বলেন, "বিধানসভার ভোট হলে বিরোধী প্রার্থী প্রত্যাহার করিয়ে নিতাম। পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী প্রত্যাহার করিয়ে আমরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত দখল করেছি। লোকসভা সাতটা বিধানসভা নিয়ে বলে তা করা সম্ভব নয়।"
পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি ভাঙড়-২ ব্লকের কৃষি আধিকারিক শীর্ষেন্দু আঢ্য-র নির্দেশে চেক বিলি করেছেন তিনি। তবে শীর্ষেন্দুবাবুকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কিছু বলতে চাননি তিনি। ভাঙড়-২ এলাকার BDO কৌশিক কুমার মাইতি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে ঘটনায় তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেন যাদবপুর কেন্দ্রের BJP প্রার্থী অনুপম হাজরা। তিনি বলেন, "এই রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে।"
অন্যদিকে যাদবপুর কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "বেআইনি ও অগণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন করতে চাইছে তৃণমূল। তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট। পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেপ্তার করা উচিত। তবে সরকারি আধিকারিকদের সাহায্যে কৃষকরা যাতে তাদের অধিকার রক্ষা করতে পারেন তা দেখা উচিত। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। কমিশন ব্যবস্থা না নিলে আইনি ব্যবস্থা নেব।"