কুলতলি, 25 ডিসেম্বর: সন্ধে নামলেই মাঝেমধ্যে জঙ্গল থেকে গর্জন ভেসে আসছে। মৃত্যু হচ্ছে গবাদি পশুর। সবমিলিয়ে শীত পড়তেই বাঘের আতঙ্ক কুলতলি ব্লকের দেউলবাড়ি গ্রামে । ইতিমধ্যেই বনদফতর গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গল নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে দিয়েছে । তবুও আতঙ্ক কাটছে না গ্রামবাসীর । তাঁদের দাবি, বাঁধের উপর যদি কোনও সোলার লাইটের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে কিছুটা হলেও নিরাপদ মনে করবেন তারা (Tiger Panic At Sundarban Village) ৷
শীত পড়তেই জলে-জঙ্গলে নজরদারি বাড়িয়েছে বনদফতর । দফায়-দফায় চেকিং করা হচ্ছে গ্রাম সংলগ্ন নদীর পাড়ের জঙ্গলে । কোথাও জাল ছেঁড়া থাকলে সঙ্গে সঙ্গে বনকর্মীরা মেরামতি করছেন । এছাড়াও বাঘ গ্রামে ঢুকলে যাতে দ্রুত খাঁচাবন্দি করা যায় তার প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে বনদফতর । সুন্দরবনের মাখরি নদীর আজমলমারী 1 নম্বর জঙ্গলের ফেন্সিং-এর মেরামতির কাজ করছে কুলতলি বিটের বনকর্মীরা । আর তা সরজমিনে খতিয়ে দেখতে এলেন ডিএফও মিলন মণ্ডল, এডিএফও অনুরাগ চৌধুরী ও রায়দিঘি রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার সুবাহু সাহা ।
নদী বা গ্রামে যেদিক থেকে বাঘ ঢুকে পড়তে পারে সেইসব জায়গায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানালেন ডিএফও মিলন মণ্ডল । তিনি জানান, ইতিমধ্যেই যে জায়গাগুলো থেকে বাঘ আসার সম্ভাবনা বেশি, সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করে চারটি ফ্লোটিং ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে । পাশাপাশি গ্রামের মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে বাঘ বেরোলে তাঁরা কি করবে ।
আরও পড়ুন: পাথরপ্রতিমায় এবার জোড়া বাঘের আতঙ্ক
মিলন মণ্ডল আরও জানান, সুন্দরবনে মোট 62 কিলোমিটার নাইলনের ফেন্সিং আছে । একটি বহুজাতিক বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে প্রায় 12 কিলোমিটার ফেন্সিং দেওয়ার জন্য আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে । যার কাজ দ্রুত শুরু হবে । গত বছর যা ক্যামেরা ট্র্যাপ লাগানো হয়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । যদিও সঠিক সংখ্যাটা গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়ার ডব্লু আই আই বলতে পারবে ৷ এছাড়াও তিনটি স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টের ফ্ল্যাট সেন্টারে মজুদ করা হয়েছে প্রচুর পরিমাণে নাইলনের জাল ও বাঁশ ।
এছাড়াও গ্রামবাসীদের মধ্যে থেকে 18 জনকে স্পেশালভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে । তাঁদেরকে জুতো, জ্যাকেট দেওয়া হয়েছে । এমনকী তাঁদের যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে চিন্তা করে ইন্সিওরেন্স করা হয়েছে । আর তাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে ব়্যাপিড রেসপন্স টিম । তাঁদেরকেও তৈরি রাখা হয়েছে যাতে বাঘ গ্রামে ঢুকলেই তাঁরা বাঘকে খাঁচা বন্দি করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। কুলতলির বিধায়ক গণেশ চন্দ্র মণ্ডল জানান, গ্রামে বাঘ ঢুকলে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই, প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ।