গঙ্গাসাগর, 5 জুন: সাম্প্রতিক কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের টালবাহানায় 100 দিনের কাজ হারিয়েছিলেন গঙ্গাসাগরের বাসিন্দা স্বপন প্রামাণিক । কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারে শুরু হয় আর্থিক অনটন । পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে তাই ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে পাড়ি দেন তিনি । কিন্তু সেখান থেকে বাড়ি ফেরা হল না আর তাঁর । পথেই ওড়িশার বালাসোরের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে স্বপনের ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, 100 দিনের কাজ হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন স্বপন প্রামাণিক। অগত্যা দিনআনা দিন খাওয়া পরিবারের ভার টানতে কেরলে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তিনি । কথা ছিল স্বপন কেরলে কাজ করে টাকা পাঠাবেন পরিবারের কাছে ৷ তাহলে স্বচ্ছলতা ফিরবে ৷ তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে সুখে থাকবেন স্ত্রী ৷ কিন্তু এই যাওয়াই শেষ যাওয়া হয়ে গেল ৷ স্বপন তো আর ফিরবে না এবার শুধু তাঁর দেহ আসার অপেক্ষায় পরিবার ৷
এক চিলতে মাটির ঘরেই দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে অভাবের সংসার ছিল স্বপন প্রামাণিকের । বড় ছেলে শুভজিতের বয়স 18 বছর ৷ ছোট ছেলে সুমনের 14 । লোকের জমিতে চাষ করেই সংসার চালাতেন স্বপন ৷ কিন্তু এইভাবে কী সংসার চলে ? 100 দিনের কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ ইচ্ছে না থাকলেও তাই অভাব অনটনের ও ছেলেদের মুখে হাসি ফোটাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেরলে কাজে যাবেন । কিন্তু ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তাঁর ৷
আরও পড়ুন: ট্রেন দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে প্রায় 20জনের, বিষাদের সুর দক্ষিণ 24 পরগনায়
জানা গিয়েছে, প্রথমে নিখোঁজ থাকলেও রবিবার বিকালে পরিবারের কাছে স্বপনের মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছয় ৷ আর তারপর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার । কীভাবে আগামিদিনে দুই ছেলেকে নিয়ে জীবন সংগ্রামের পথে এগিয়ে যাবে, তা নিয়েই এখন চিন্তিত স্বপনের স্ত্রী । তবে ইতিমধ্যেই সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং আগামিদিনে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ।