সুন্দরবন, 20 জানুয়ারি : বাঘের পর এবার কচ্ছপ ৷ জল ও স্থল, দু'জায়গাতে ঘুরে বেড়ানো এই প্রাণীর শরীরে জিপিএস ট্রান্সমিটার নামক ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র লাগাল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প । বাটাগুড় বাসকা বা পোড়া কাঠা একটি বিশেষ ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপ ৷ বুধবার এদের শরীরে রেডিয়ো ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনের নদী, খাঁড়িতে ছেড়ে দেওয়া হল । তারা কখন, কোথায় বংশ বিস্তার করছে, পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করছে, সেই সব তথ্য সংগ্রহ করতেই এই পদক্ষেপ করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প (Sunderban Tiger Reserve places GPS transmitter on Batagur Baska Turtle body) ।
বন দফতর সূত্রে খবর, একসময় সুন্দরবন থেকে শুরু করে মায়ানমার, থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া উপকূল পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় এই বিরল প্রজাতির কচ্ছপের বসতি ছিল । প্রায় তিন দশক আগে আনুমানিক 1995-96 সালে বন দফতর সমুদ্র তীর থেকে অলিভ রিডলে বা সামুদ্রিক কাঠা প্রজাতির কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করে ৷ এই ডিমগুলি ফুটিয়ে নবজাতক কচ্ছপগুলির মধ্যে বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের সন্ধান পায় বন দফতর ৷
আরও পড়ুন : Tiger in Sundarbans : লোকালয়ে বাঘ আটকাতে সুন্দরবনকে লোহার জালে ঘেরার দাওয়াই বনমন্ত্রীর
সেই থেকে এই বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের সংরক্ষণ শুরু করে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প । সুন্দরবনের সজনেখালিতে আলাদা একটি পুকুর তৈরি করে সেখানে কয়েক বছর ধরে এই কচ্ছপ সংরক্ষণ ও তার প্রজনন করে চলেছে ব্যাঘ্র প্রকল্প । মাত্র 12টি কচ্ছপ থেকে বংশবৃদ্ধি হয়ে বর্তমানে 370 টি বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে এখানে ।
এখন সজনেখালির পাশাপাশি দোবাঁকি, খাটোয়াঝুড়ি ও হরিখালিতে এদের সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যবস্থা করেছে বন দফতর । সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রজননে সক্ষম এমন 10টি বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপকে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হয়েছে । এর মধ্যে 7টি স্ত্রী ও 3টি পুরুষ কচ্ছপ । এদের গতি প্রকৃতির উপর খেয়াল রাখতে কচ্ছপগুলির শরীরে জিপিএস ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে । এর ফলে বিলুপ্ত প্রায় এই প্রজাতির কচ্ছপ সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন : Tiger Deaths in India : চলতি বছরে সারা দেশে 126টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে