নামখানা, 10 অগস্ট: শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে ঘনীভূত পরিণত হতে চলেছে ৷ এর ফলে মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে । বুধবার সকাল থেকে বাংলার আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে । উপকূলীয় এলাকার শুরু হয়েছে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট । নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র । এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে । সতর্কতা জারি করা হয়েছে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, বকখালি ও সাগরদ্বীপে সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় । পর্যটকদেরও সমুদ্রে নামতে বারণ করা হয়েছে । সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । একটানা বৃষ্টি ও বাতাসের গতিবেগে আতঙ্কে সুন্দরবনবাসী (Sundarbans Locals are in fear as depression over Bay of Bengal) ।
বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর-সমেত উপকূলের পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত করেছে প্রশাসন । সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় । নিম্নচাপ ও কোটালের জোড়া ফলার মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি সেরে রেখেছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসন । প্রায় 105টিরও বেশি ত্রাণকেন্দ্র ও স্কুল প্রস্তুত রাখা হয়েছে । উপকূলে বিপদ বুঝলেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হবে বাসিন্দাদের । দু'টি বিশেষ সিভিল ডিফেন্সের দলও তৈরি । এই দলগুলি বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত । রয়েছে একটি মহিলাদের দল । পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সুন্দরবনের ব্লকে পাঠানো হবে দলগুলিকে ।
আরও পড়ুন: শিয়রে ভরা অমাবস্যার কোটাল, সুন্দরবনে সতর্কতা প্রচারে প্রশাসন
জেলা সদর আলিপুরে একটি মেগা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে । পাশাপাশি কাকদ্বীপ, ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবার মহকুমাশাসকের দফতর ও সুন্দরবনের 13টি ব্লকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম । প্রতিটি পঞ্চায়েতকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে । নিম্নচাপের পাশাপাশি আগামী বৃহস্পতিবার পূর্ণিমার ভরা কোটাল ।
কোটাল চিন্তা বাড়াচ্ছে । জলস্তর বাড়লে ফের নদী বাঁধ ক্ষতির মুখে পড়বে বলে শঙ্কা সুন্দরবনবাসীদের । গত গুরুপূর্ণিমাতেও জলস্তর বৃদ্ধিতে সুন্দরবনের একাধিক মাটির তৈরি নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল । এক গ্রামবাসী শেখ মুরশিদ বলেন,"এর আগে ঝড়ের পর থেকে প্রতি বার অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ভরা কোটালে সুন্দরবন উপকূলের কাঁচা মাটির নদী বাঁধ ভেঙে নোনা জলে প্লাবিত হয় এলাকা । কিছু কিছু জায়গায় পাকা বাঁধ নির্মাণ করেছে প্রশাসন । এখন কিছু অংশ কাঁচা মাটির নদী বাঁধ থাকায় নদীর জলস্তর বৃদ্ধিতে প্লাবিত হয় এলাকা ।"
আরও পড়ুন: যশের ক্ষত এখনও টাটকা ! অশনির ভ্রুকুটিতে তটস্থ সুন্দরবনের নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা