জয়নগর, 13 নভেম্বর: বাড়ির কাছেই মসজিদ আর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাজরা হয়ে খুন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জয়নগর । গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে এক দুষ্কৃতীর ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে বাইকে করে পাঁচজন দুষ্কৃতী এসে তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করকে গুলি করে । ঘটনাটি ঘটে জয়নগর থানা এলাকার বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতে ৷ গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এলাকাবাসীরা, এরপর এলাকাবাসীদের হাতে ধরা পড়ে এক দুষ্কৃতী ৷ গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় তার ৷ পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বাকি দুষ্কৃতীরাএলাকা থেকে চম্পট দেয় । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশের পক্ষ থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে । ইতিমধ্যে এই খুনের অন্যতম এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ । পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তার নিজের দোষ স্বীকার করে ।
ওই খুনের ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বামুনগাছি গ্রাম। গ্রামের পরপর প্রায় 20-25টি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কার্যত দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে গোটা গ্রাম । এদিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে এই অশান্তির ঘটনা শুরু হয় বলে খবর ৷ আগুন নেভাতে গ্রামে ঢুকতে দমকলকর্মীদেরও বাধা দেওয়া হয় বলে খবর ৷ বাইরে থেকে কাউকে গ্রামে ঠুকতে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে ৷ গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য। চোখের সামনেই অনেকের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় ৷ অভিযোগের তির তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷
এলাকারই এক মহিলা বললেন,“আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা । যেহেতু আমরা সিপিএম করি সেই কারণে । যে খুন হয়েছে তাঁর সঙ্গে আমাদের গ্রামের কেউ জড়িত নয় । অথচ গ্রামে এসে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বলছে সইফুদ্দিনকে এরাই খুন করেছে।” অর্থাৎ নিতান্তই সন্দেহের বশে একের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গ্রামের আরও এক মহিলা বলেন, “আমরা খেটে খাওয়া মানুষ । কোনও রাজনীতি করি না । তারপরও ঘরদোর পুড়িয়ে ছাই করেছে । কোথায় থাকব এখন? একটা হাড়ি পর্যন্ত নেই খাবার রান্না করার ।”
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা এদিন বলেন, “সিপিএম-বিজেপি আশ্রিত সমাজ বিরোধীরা সইফুদ্দিনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে খুন করে । এর একটাই কারণ যাতে দক্ষিণ 24 পরগনায় একটা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়। পুলিশকে বলব যত দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, কারও ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে যত দ্রুত সম্ভব খুনিকে খুঁজে বের করা হোক । যথাযথ তদন্ত হোক ।
আরও পড়ুন: