বারুইপুর, 12 জুলাই: মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া থেকে যে অশান্তির সূত্রপাত, ভোটপর্ব ও গণনাপর্ব পেরিয়েও তা অব্যাহত ৷ বর্তমানে ভোট পরবর্তী হিংসায় অশান্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড় ৷ মঙ্গলবার রাত থেকেও অশান্ত ভাঙড়ে চলেছে গুলি ৷ মৃত্যু হয়েছে তিনজনের ৷ সেই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ভাঙড়ে উপস্থিত হয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ৷ সাংবাদিক সম্মেলনে শাসক শিবিরকে একহাত নেন সিপিএম সেলিম ৷
সেলিম অভিযোগ করে বলেন, জেলা পরিষদের 82 ও 83 নং আসনে গণপ্রতিরোধের মুখে তৃণমূলের সশস্ত্র দুষ্কৃতী বাহিনী পিছু হঠে এবং বেশ কিছু বুথে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেন। যে সব বুথে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন তার 90 শতাংশ আসনেই সিপিআই(এম), আইএসএফ ও জমি রক্ষা কমিটির প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন। গণনা কেন্দ্রে জেলা পরিষদের 82 নং আসনে আইএসএফ প্রার্থী জাহানারা বিবি গণনার শেষে প্রায় 1700 ভোটে জয়ী হন। রাত 9টায় গণনা শেষ হলেও রাত 12টা পর্যন্ত বিডিও ভাঙড় 2-এর ফল ঘোষণা করেননি ইচ্ছাকৃতভাবেই অসৎ উদ্দেশ্যে।"
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, "আরাবুল ইসলাম পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী ছিলেন, অথচ অন্য স্তরের আসনগুলির গণনার সময়েও অবৈধভাবে গণনা কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে উলটো ফল ঘোষণা করার জন্য হুমকি দিতে থাকেন এবং বিডিও তাঁর কথা শুনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীকেই জয়ী ঘোষণা করেন । এর প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাত 1টা নাগাদ পুলিশ নিরস্ত্র সমবত জনতার ওপর গুলি চালায়। এর ফলে রেজাউল গাজী, হাসান মোল্লা ও রাজু মোল্লা নামে 3 জন নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।"
সেলিম বলেন, "ভাঙড় 2 নম্বর ব্লকে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়ে কী ঘটেছিল, তা রাজ্যের মানুষ দেখেছে। আইএসএফ এবং সিপিআই(এম) প্রার্থীরা যাতে মনোনয়ন জমা দিতে না পারে, তার জন্য দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে দুষ্কৃতীদের জড়ো করে, পুলিশ ও সাধারণ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে ব্যাপক বোমাবাজি করা হয় ও গুলি চালানো হয়। মনোনয়ন পর্বের শেষ সময়ে মানুষের প্রতিরোধে দুষ্কৃতীরা পালাতে বাধ্য হয়। সেই সময়ে তৃণমূল দুষ্কৃতীদের আক্রমণে 3 জনের মৃত্যু হয়েছিল।"
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের অশান্তি রুখতে পুলিশকে ফ্রি হ্যান্ড দিতে চান মমতা
তিনি অভিযোগ করে আরও জানান, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে পুলিশ ও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। মানুষের দাবির সামনে নত হয়ে প্রশাসন তখনকার মতো মনোনয়ন পত্র জমা নিলেও, পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন তা বাতিল করে দেয়। নির্বাচনের দিন জেলা পরিষদের 81 নং আসনে, যেখানে তৃণমূলী বাহুবলী আরাবুল পুত্র প্রার্থী, সেখানে পুলিশের সহযোগিতায় 71টি বুথের মধ্যে 64টি বুথ দখল করে ব্যাপক ছাপ্পা ভোট দেয়। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বিকাল 5.30 মিনিট নাগাদ ভাঙড় 2 ব্লকে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠায় নির্বাচন কমিশন।