পাথরপ্রতিমা, 27 জুন: সাদা ক্যানভাসে রঙিন তুলির টানে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ছুটে চলেছেন সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার যুবক সমরেশ মাইতি (Painter Samaresh wants to be named in Guinness World Records) । ছোটবেলা থেকে অভাবের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে 22 বছরের আঁকার ওপর কঠিন অনুশীলনের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই নিজের নাম নথিভুক্ত করেছে 'ইন্ডিয়ান বুক অফ রেকর্ডস ও ন্যাশনাল বুক অফ রেকর্ডসে' ৷ দারিদ্রতাকে উপেক্ষা করে কঠিন অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে ইন্ডিয়ান গট ট্যালেন্ট ও গিনিস বুকে নিজের নাম তুলতে মরিয়া সমরেশ ।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ পাথরপ্রতিমা । দক্ষিণ 24 পরগনা পাথরপ্রতিমা রামগঙ্গা অঞ্চল দক্ষিণ গোবিন্দপুরে এক চিলতে বাড়িতে বসবাস চিত্রকর সমরেশের । চরম দারিদ্রতা মাইতি পরিবারের শিশুদেরকে অঙ্কন প্রশিক্ষণ দিয়ে যৎসামান্য অর্থ উপার্জন করেই চলে সংসার ।
দারিদ্রতাকে উপেক্ষা করে নিজের লক্ষ্য এগিয়ে চলেছেন সে। সমরেশের ছবি আঁকার কৌশল আর পাঁচটা চিত্র শিল্পীর মতো নয় । কখনও মুখে তুলে নিয়ে সাদা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলছে নানা চিত্র, কখনও বা নিজের শরীরে একাধিক অঙ্গে মোট 22টি তুলি সাদা ক্যানভাসে কখনও ফুটিয়ে তুলছে ফুল, কখনও বা সিংহ । এখানেই থেমে থাকেনি সমরেশ ৷ আগুন জ্বালিয়ে সাদা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলছে সিদ্ধিদাতা গণেশ-সহ একাধিক চিত্রকলা ।
তিনি বলেন, "খুব ছোটবেলা থেকেই দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে আঁকা শুরু করি । দারিদ্রতা নিত্যদিনের সঙ্গী, আজও সেই দারিদ্রতাকে উপেক্ষা করে স্বপ্ন দেখছি । আগামিদিনে কতটা এগিয়ে যেতে পারব আমার স্বপ্ন পূরণের দিকে তা জানি না । কিন্তু অনুশীলন চালিয়ে যাব । আমার ছবি আঁকার বিষয়ে সরকার যদি পাশে থাকে তাহলে স্বপ্ন পূরণ করতে পারব ।"
সমাজের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের ছবি আঁকা দেখে সমরেশ অনুপ্রাণিত হয় নিজের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে ছবি আঁকার জন্য । কঠিন অনুশীলনের পর সেই কৌশল রপ্ত করে । সরকারি সাহায্যের আশায় বসে রয়েছে সত্তরোর্ধ্ব সমরেশের মা ।
তিনি জানান, কোনওরকম একচিলতে ঘরে বসবাস করি । প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেকোনও মুহূর্তে উড়ে যাবে ঘরের চাল টুকু । ছেলেদের সামান্য উপার্জনের টেনেটুনে চলে সংসার । সরকার যদি আমাদের পাশে দাঁড়াই সংসারটা বাঁচে । এই অবস্থায় সমরেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্য গৌতম পাত্র ।
তিনি জানান, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা অভূতপূর্ব প্রতিভাধর সমরেশ । অভাবের জন্য এই রকম এক প্রতিভাধর চিত্রশিল্পী হারিয়ে যাবে আমরা সেটা ওদের দিতে পারি না । সমরেশ যাতে তার নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, তার সবরকম সাহায্য পঞ্চায়েতে তরফ থেকে করা হবে ।